ভারতের সঙ্গে চুক্তি গোলামির নবতর সংস্করণ, হাসিনা বাংলাদেশকে বাফার স্টেট বানাতে চান
নিজস্ব প্রতিবেদক: Kanak Sarwarপ্রকাশ: রবিবার, ৩০ জুন, ২০২৪ এ ১২:০০ AM

হাসিনার নয়াদিল্লি সফর প্রসঙ্গে বিএনপি
প্রধানমন্ত্রীর নয়াদিল্লি সফরে ভারতের সঙ্গে যে ১০টি সমঝোতা স্মারক সই হয়েছে, সেগুলো গোলামির নবতর সংস্করণমাত্র বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
তিনি বলেছেন, কানেকটিভিটির নামে ভেতরে ভারতের এক অংশ থেকে আরেক অংশে রেল যোগাযোগের জন্য বাংলাদেশের ভেতর দিয়ে করিডর দেওয়া হয়েছে। এতে দেশের সার্বভৌমত্ব ও জাতীয় নিরাপত্তা মারাত্মক হুমকির মুখে পড়বে।
রবিবারা বিকালে গুলশানে বিএনপির চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব অভিযোগ করেন মির্জা ফখরুল। তিনি বলেন, ‘আমাদের নিশ্চয়ই ১৯৭২ সালে ভারতের সঙ্গে স্বাক্ষরিত ২৫ বছরের গোলামি চুক্তির কথা স্মরণ আছে। ৫২ বছর পর সে ধারাবাহিকতায় গত ২২ জুন ভারতের সঙ্গে সমঝোতার আড়ালে যেসব চুক্তি করা হলো, তা বাংলাদেশকে আজীবনের জন্য ভারতের গোলামে পরিণত করবে। এর ফলে বাংলাদেশের জাতীয় নিরাপত্তা বিপন্ন হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।’
এসব চুক্তি-সমঝোতা স্মারকের মাধ্যমে দেশের প্রতিরক্ষা ও জাতীয় নিরাপত্তার বিষয়টিকে ভারতের জাতীয় প্রতিরক্ষা ও নিরাপত্তার অংশে পরিণত করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেন বিএনপির মহাসচিব। তিনি বলেন, ‘এটা খুবই বিপজ্জনক এবং দেশের স্বাধীনতার প্রতি হুমকি। এটি শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান ও জোট নিরপেক্ষ নীতির পরিপন্থী। বস্তুত, এসব সমঝোতা ও চুক্তির মাধ্যমে শেখ হাসিনা বাংলাদেশকে আঞ্চলিক ভূরাজনীতিতে নিরাপত্তাকৌশলগত বাফার স্টেট হিসেবে ভারতকে ব্যবহারের সুযোগ করে দিতে চান।’
এর ফলে বাংলাদেশ নিশ্চিতভাবে আঞ্চলিক ভূরাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বিতার জটিলতার মধ্যে পড়বে বলে মনে করেন মির্জা ফখরুল। তিনি বলেন, যে সাতটি সমঝোতা স্মারক নতুন করে সই করা হয়েছে, সেগুলোর প্রায় সবই বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চলকেন্দ্রিক। প্রয়োজনের সময় বাংলাদেশের ভূখণ্ডকে ভারতের সামরিক ও বেসামরিক পণ্য পরিবহনের জন্য কৌশলগতভাবে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ‘চিকেন নেক’কে বাইপাস করে ব্যবহার করার সুদূরপ্রসারী মহাপরিকল্পনা থেকেই এসব সমঝোতা-চুক্তি করা হয়েছে বলে তারা মনে করছেন। জাতীয় স্বার্থবিরোধী এসব চুক্তি জনগণ মেনে নেবে না বলেও উল্লেখ করেন বিএনপির মহাসচিব।
গত দেড় দশকে বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক অনন্য উচ্চতায় পৌঁছেছে বলে ক্ষমতাসীনদের পক্ষ থেকে বলা হয়ে থাকে। এ প্রসঙ্গ উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, সম্পর্কের তথাকথিত এই সোনালি অধ্যায়-এর সময়কালে বাংলাদেশের জনগণের তরফে প্রাপ্তি শূন্যের কোঠায়। এ সময়ে দুই দেশের মধ্যকার লেনদেনের প্রধান অংশজুড়ে রয়েছে কানেকটিভিটির নামে একের পর এক ভারতকে ট্রানজিট ও করিডর–সুবিধা দেওয়া। ট্রানজিট-করিডর দেওয়ার রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও কৌশলগত ঝুঁকি সত্ত্বেও সবকিছুই একতরফাভাবে করা হয়েছে। এর মাধ্যমে বাংলাদেশের স্বার্থকে কোনো গুরুত্বই দেওয়া হয়নি।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, একদিকে ভারত পেয়েছে অবাধ স্থল ও নৌ ট্রানজিট, যা ভারতের অবশিষ্ট অংশের সঙ্গে উত্তর–পূর্ব ভারতের ‘সেভেন সিস্টার্স’–এর যোগাযোগের সময় ও দৈর্ঘ্য কমিয়েছে প্রায় তিন–চতুর্থাংশ। কলকাতা-আগরতলার ১ হাজার ৭০০ কিলোমিটার দূরত্ব কমে দাঁড়িয়েছে ৩৫০ কিলোমিটারে। ভারত পেয়েছে বাংলাদেশের পায়রা, মোংলা ও চট্টগ্রাম বন্দর ব্যবহারের অগ্রাধিকারের সুবিধা। অন্যদিকে বাংলাদেশ নেপালের মাত্র ২১-২২ কিলোমিটারের ট্রানজিট–সুবিধা ভারতের কাছ থেকে আদায় করতে পারেনি।
ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকার এ দেশের জনগণের প্রতিনিধিত্ব করে না দাবি করে মির্জা ফখরুল বলেন, সে কারণে জনগণের কাছে তাদের কোনো জবাবদিহি নেই। তাই দেশের স্বার্থ রক্ষার জন্যও তারা সচেষ্ট নয়। এর ফলে বাংলাদেশের ভেতর দিয়ে রেল করিডর দেওয়ার চুক্তি; তিস্তা প্রকল্পে ভারতের সহযোগিতা গ্রহণ; প্রতিরক্ষা ও সামরিক সহযোগিতা; ওষুধসংক্রান্ত সমঝোতা; বাংলাদেশের জলসীমায় ভারতের অবাধ বিচরণ; ভারতের ইন স্পেস এবং বাংলাদেশের ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের যৌথ স্যাটেলাইট সমঝোতা; ডিজিটাল পার্টনারশিপ; গ্রিন পার্টনারশিপ; সমুদ্র সহযোগিতা ও সুনীল অর্থনীতি ইত্যাদি নানা নাম দিয়ে যে ১০টি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হলো, তাতে বাংলাদেশের প্রাপ্তি শূন্য।
বাংলাদেশের স্বার্থ রক্ষার চেয়ে ভারতের কাছে শেখ হাসিনার কৃতজ্ঞতা প্রকাশের দায়বদ্ধতা থেকে এসব সমঝোতা সই হয়েছে বলে মন্তব্য করেন মির্জা ফখরুল। তার মতে, সে কারণেই অনেক আগে ভারতের সঙ্গে হওয়া সাড়ে সাত বিলিয়ন ডলারের ভারতীয় ঋণচুক্তি (লাইন অব ক্রেডিট—এলওসি) বাস্তবায়নের প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত করার বিষয়ে এ সফর ছিল নীরব। তা ছাড়া ডলারকে পাশ কাটিয়ে ভারতীয় মুদ্রায় বাণিজ্য পরিচালনার বিষয়টি উঠে এসেছে আলোচনায়। অথচ বাংলাদেশের রপ্তানি ও প্রবাসী আয়ের অন্যতম প্রধান মুদ্রাই হচ্ছে মার্কিন ডলার। ভারতের সঙ্গে বাণিজ্যের ক্ষেত্রে শুল্ক-অশুল্ক বাধা দূর করে বিপুল বাণিজ্যিক ঘাটতি কাটিয়ে ওঠার কিছুই এসব সমঝোতায় স্থান পায়নি।
বাংলাদেশ—ভারত সীমান্তে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) গুলিতে প্রতিবছর রেকর্ডসংখ্যক হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হওয়ার পরও এ সফরে বিষয়টি নিয়ে বাংলাদেশ সরকার চূড়ান্তভাবে নির্লিপ্ত থেকেছে বলে অভিযোগ করেন বিএনপির মহাসচিব। মানবাধিকার সংগঠন আইন ও সালিশ কেন্দ্রের (আসক) তথ্য অনুযায়ী, ২০২৪ সালের জানুয়ারি থেকে মে মাসের শেষ পর্যন্ত অন্তত ১১ বাংলাদেশি সীমান্তে হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছেন। আহত হয়েছেন আরও ৯ জন। মানবাধিকার সংগঠন অধিকারের তথ্যমতে, ২০০০ থেকে ২০২০ সালের মধ্যে ভারতীয় সীমান্ত বাহিনীর গুলিতে কমপক্ষে ১ হাজার ২৩৬ বাংলাদেশি নিহত এবং ১ হাজার ১৪৫ জন আহত হয়েছেন। এমনকি বিএসএফের গুলিতে বাংলাদেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিজিবির সদস্যরাও রেহাই পাননি।
মির্জা ফখরুল বলেন, ভারত-নেপাল, ভারত-চীন ও ভারত-পাকিস্তান সীমান্তে এতসংখ্যক হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটতে দেখা যায় না। তারপরও বাংলাদেশ সরকার বিষয়টি জোরালোভাবে তুলে ধরছে না।
সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, নজরুল ইসলাম খান, সেলিমা রহমান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
Related News

কল্যাণ রাষ্ট্র হিসেবে বাংলাদেশকে গড়ার মহান স্বপ্ন নিয়ে কাজ করছে জামায়াত -ডা. শফিকুর রহমান
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, ‘জামায়াতে ইসলামীর নেতাকর্মীদের দুর্বল অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়াতে হবে। কোন ভয়-ভীতির তোয়াক্কা না করে সংগঠনের কাজকে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে। আল্লাহ দ্বীনকে বিজয়ী করতে ইসলামী আন্দোলনের কর্মীদের সর্বোচ্চ ত্যাগ স্বীকার করতে হবে। আমাদের দাওয়াত হচ্ছে মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামিনকে এক রব এবং রাসুলকে (সা) আমাদের নেতা মানার দাওয়াত। কুরআন ও সুন্নাহ’র আলোকে বাংলাদেশে একটি কল্যাণ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার মহান স্বপ্ন নিয়ে জামায়াত কাজ করছে। ইনশাআল্লাহ আমরা এই কাজে একদিন সফল হব।’
সোমবার বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী চট্টগ্রাম মহানগরী আয়োজিত থানা ও ওয়ার্ড দায়িত্বশীল শিক্ষাশিবির-২০২৪-এ প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় মজলিশে শূরা সদস্য, চট্টগ্রাম মহানগরী আমির ও সাবেক এমপি শাহজাহান চৌধুরীর সভাপতিত্বে ও কেন্দ্রীয় মজলিশে শূরা সদস্য, চট্টগ্রাম মহানগরী সেক্রেটারি অধ্যক্ষ মুহাম্মদ নুরুল আমিনের সঞ্চালনায় শিক্ষাশিবিরে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান, মাওলানা আবদুল হালিম ও মাওলানা মুহাম্মদ শাহজাহান।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে আমিরে জামায়াত ডা. শফিকুর রহমান বলেন, ‘দায়িত্বশীলদের অনুপ্রেরণা প্রদান করে টিমস্পিরিটের মাধ্যমে সকলকে নিয়ে সংগঠনকে আরো মজবুত করতে হবে। সংগঠনের থানা ও ওয়ার্ড অর্থাৎ স্থানীয় কার্যক্রম যত বেশি শক্তিশালী হবে, সামগ্রিকভাবে মহানগরী ও কেন্দ্রীয় সংগঠন ততো সুদৃঢ় হবে। যেখানে যত বেশি বিপর্যয় এসেছে সেখানে দ্বীনের দাওয়াত আরো ব্যাপকতর হয়েছে। ফলে কোনো ষড়যন্ত্র ও রাজনৈতিক বাঁধা দেখে ভয় পাওয়া বা হতাশ হওয়া অথবা কাজ কমিয়ে দেয়া ইসলামী আন্দোলনের কর্মীদের জন্য উচিৎ নয়।’
তিনি বলেন, ‘মানবজীবনের এমন কোনো সমস্যা নেই যার সমাধান ইসলামে দেয়া হয়নি। মানবজাতির জন্য সব ধরনের সমস্যার সমাধান হলো আল কুরআন। আমাদের প্রত্যেককে পবিত্র কুরআনের বিধান অনুযায়ী নিজেদের জীবনকে সাজাতে হবে। এজন্য আমাদের প্রত্যেককে প্রতিদিন বেশি বেশি কুরআন, হাদীস ও ইসলামী সাহিত্য অধ্যয়ন করা দরকার। একই সাথে ইসলামের দাওয়াত পৌঁছাতে হবে প্রতিটি ঘরে ঘরে। তাহলেই ইসলামের বিজয় অনিবার্য হয়ে উঠবে।’
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান বলেন, ‘যোগ্যতা যাদের আছে আল্লাহ তায়ালা নেতৃত্ব তাদের হাতেই দেন। এটাই আল্লাহর বিধান। নিজেদেরকে জনগণের খেদমতের জন্য তৈরি করে আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন করাই বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী তার লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে।’
সভাপতির বক্তব্যে কেন্দ্রীয় মজলিশে শূরা সদস্য, চট্টগ্রাম মহানগরী আমির ও সাবেক এমপি শাহজাহান চৌধুরী বলেন, ‘তৃণমূল পর্যায়ে আমাদেরকে সংগঠন মজবুতির দিকে গুরুত্ব দিতে হবে। মনে রাখবেন, সংগঠন মজবুত থাকলে যেকোনো সময়ে যেকোনো সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন সম্ভব। পাশাপাশি এই সেশনে সকল বিভাগের পরিকল্পনা বাস্তবায়নে সকল নেতাদেরকে সচেষ্ট হতে হবে।’

বাংলাদেশ ব্যাংকে সাংবাদিকরা কেন ঢুকবে, প্রশ্ন ওবায়দুল কাদেরের
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, পৃথিবীর কোন দেশে সেন্ট্রাল ব্যাংকে ঢুকতে পারছে অবাধে? কোন দেশে? ভারতের ফেডারেল ব্যাংকে কেউ কি অবাধে ঢুকতে পারছে? কেন ঢুকবে? ওয়েবসাইটে সব আছে। আপনার জানবার বিষয়, আপনি ভেতরে ঢুকবেন কেন?
শনিবার দুপুরে আওয়ামী লীগ সভাপতির ধানমন্ডির রাজনৈতিক কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।
রিজার্ভ ৪৮ বিলিয়ন ডলার থেকে এখন ১৩ বিলিয়ন ডলারে নেমে আসায় সরকার উদ্বিগ্ন কি- এমন প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, আপনাকে কে বললো ১৩ বিলিয়ন ডলার? ‘নিউজে বলছে’- সাংবাদিকদের এমন উত্তরে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, আপনাকে কোন নিউজে বলছে? আমাদের কাছে হিসাব আছে। এসময় সাংবাদিকরা বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরই বলেছেন- ব্যবহার করার মতো ১৩ বিলিয়ন ডলার আছে। তখন ওবায়দুল কাদের বলেন, গভর্নর কে তাহলে জিজ্ঞেস করুন, কী কারণে এই পর্যায়ে এলো এটা? এটা তো আমরা জানি না। আমরা জানি, ১৯ থেকে ২০ বিলিয়ন ডলার, এর মধ্যেই ঘুরপাক খাচ্ছে।
আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, স্বাধীনতার পর আমরা কয় বিলিয়ন ডলার নিয়ে যাত্রা শুরু করেছি। আমাদের ডলার ছিল? বিএনপি কয় বিলিয়ন ডলার রেখে গেছে? ৩ বিলিয়ন প্লাস। তাহলে এখন ১৯-২০ বিলিয়ন ডলার আছে, এটা কী কম নাকি? রপ্তানি আয় এখন আমাদের বাড়ছে, রেমিট্যান্সও বাড়ছে এই মুহূর্তের যে প্রবণতা। এগুলো বাড়লে রিজার্ভও বাড়বে।

বিএনপি নেতা ইশরাক কারাগারে
পল্টন থানার নাশকতার মামলায় আত্মসমর্পণ করে কারাগারে গেলেন বিএনপির আন্তর্জাতিক বিষয়ক কমিটির সদস্য ইশরাক হোসেন।
রোববার (১৯ মে) ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিচারক মোহাম্মদ আস-সামছ জগলুল হোসেন এ আদেশ দেন।
এ মামলায় উচ্চ আদালত থেকে জামিনে ছিলেন ইশরাক। আজ আদালতে হাজির হয়ে আইনজীবীর মাধ্যমে জামিন বর্ধিত করার আবেদন করেন তিনি। শুনানি শেষে আদালত তার জামিন বাড়ানোর আবেদন বাতিল করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।

নিজেদের স্বার্থেই ভারতের সঙ্গে বন্ধুত্ব দরকার: ওবায়দুল কাদের
Advertisement
নিজেদের স্বার্থেই ভারতের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক রাখা দরকার বলে মনে করেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, ‘আমরা ভারতের বন্ধু। এটা আমাদের স্বার্থেই দরকার। আমরা কারও দাসত্ব করি না। ভারতের সঙ্গে আমাদের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক।’
শনিবার বিকালে রাজধানীর মোহাম্মদপুরের গজনবী সড়কে আয়োজিত আওয়ামী লীগের শান্তি ও উন্নয়ন সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে ওবায়দুল কাদের এসব কথা বলেন। ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগ এ সমাবেশের আয়োজন করে।
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘ভারতের সঙ্গে বিএনপি যে শত্রুতা করেছিল, তাতে লাভ হয়নি। শত্রুতার কারণে সংশয়, সন্দেহ, অবিশ্বাস জন্মেছিল। শেখ হাসিনা সব সংশয়, সন্দেহ, অবিশ্বাস ভেঙে দিয়েছেন। ভারত এখন আমাদের বন্ধু।’
সমাবেশে বিএনপি নেতাদের উদ্দেশ্য করে ওবায়দুল কাদের বলেন, বিএনপি নেতারা হঠাৎ চাঙা হয়ে গেছেন। এর কারণ ডোনাল্ড লু বাংলাদেশ সফরে আসছেন। তারা আবার ক্ষমতার স্বপ্নে বিভোর। লু আসছেন সরকারের সঙ্গে সম্পর্ক আরও এগিয়ে নিতে। বিএনপির স্বপ্নপূরণের জন্য নয়।
গতকাল নয়াপল্টনে বিএনপি নেতা গয়েশ্বর চন্দ্র রায়ের বক্তৃতাকে ‘মিথ্যাচার’ উল্লেখ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, গয়েশ্বর কোথায় ছিলেন এত দিন? কোথা থেকে এলেন, কোথায় পালিয়ে ছিলেন? মাথায় তো দেখি গান্ধী টুপি। বিএনপি এখন ভণ্ডামি শুরু করেছে।
ওবায়দুল কাদের বলেন, দালালি কারা করে, সেটা সবার জানা। মোদির (ভারতের প্রধানমন্ত্রী) নির্বাচিত হওয়ার দিন, সকালে বন্ধের দিন দূতাবাসে বিএনপির নেতারা ফুল, মিষ্টি নিয়ে হাজির হয়েছিল। তাহলে দালাল কারা? খালেদা জিয়া ভারত সফরে গিয়ে গঙ্গার পানিবণ্টনের কথা ভুলে গিয়েছিলেন। দেশে ফেরার পর সাংবাদিকেরা প্রশ্ন করলে তিনি বললেন, গঙ্গার পানি চুক্তির বিষয়টি তিনি নাকি ভুলেই গিয়েছিলেন। তাহলে দালাল কারা?
ওবায়দুল কাদের আরও বলেন, ‘নির্বাচনের আগে বিএনপি নেতাদের দেখলাম, তারা হাসিখুসি। ভারতের আপ্যায়নে, ডিনার খেয়ে বিএনপি নেতারা হাসিখুশি ছিল। ক্ষমতার স্বপ্নেও বিভোর ছিল। কিন্তু দেশের মানুষ তো ৪২ শতাংশ ভোট দিয়ে শেখ হাসিনাকে আবার ক্ষমতায় বসিয়েছে। তিনি বলেন, এখন বিএনপি বলছে, জনগণ উপজেলা নির্বাচন নাকি প্রত্যাহার করেছে। তাহলে ৩৬ থেকে ৪০ শতাংশ ভোটার, যারা ভোট দিল, তারা কারা? আসলে দেশের মানুষ শেখ হাসিনার সততায়, উন্নয়নে এবং অর্জনে মুগ্ধ। তাই দেশের মানুষ শেখ হাসিনাকেই বেছে নিচ্ছে৷’
বিএনপি নানা সময় নানা নাটক করে উল্লেখ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, একসময় জজ মিয়ার নাটক করল, নির্বাচনের আগে করল মিয়া আরেফির নাটক। তিনি বলেন, আবারও বিএনপির বিরুদ্ধে খেলা হবে। জনগণের জানমাল সুরক্ষায়, অপশক্তির বিরুদ্ধে খেলা আবারও হবে। প্রস্তুত থাকেন, এমন শিক্ষা দেব, পালাতে পালাতে অলিগিলি পার হয়ে বুড়িগঙ্গার পচা পানি খাবে।
বর্তমানে বৈশ্বিক নানা পরিস্থিতির কারণে দেশে চলমান কিছু সাময়িক সংকট দ্রুত কেটে যাবে বলে উল্লেখ করেন ওবায়দুল কাদের।
সমাবেশে সঞ্চালনা করেন ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এস এম মান্নান। মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ বজলুর রহমানের সঞ্চালনায় সমাবেশে বক্তব্য দেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক, কামরুল ইসলাম, আবদুর রহমান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ, সাংগঠনিক সম্পাদক বি এম মোজাম্মেল হক, মির্জা আজম, প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা বিপ্লব বড়ুয়া, ঢাকা উত্তর সিটির মেয়র আতিকুল ইসলাম, ঢাকা-১৪ আসনের সংসদ সদস্য মাইনুল হোসেন খান প্রমুখ।
