ভারত বড়সড় অর্থনৈতিক সমস্যার সম্মুখীন-নিউইয়র্ক টাইমসের নিবন্ধ
নিজস্ব প্রতিবেদক: Kanak Sarwarপ্রকাশ: মঙ্গলবার, ১১ জুন, ২০২৪ এ ১০:১৫ AM

লোকসভা নির্বাচনের ফলাফল প্রকাশের আগে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে ব্যাপকভাবে একজন ক্যারিশম্যাটিক এবং জনপ্রিয় ব্যক্তিত্ব হিসাবে দেখা হয়েছিল, যিনি ব্যবসায়িক বিশ্বে নিজের গুরুত্ব তুলে ধরেছেন। যদিও তিনি একটি চলমান সমস্যার সমাধান করতে ব্যর্থ হয়েছেন-দ্রুত অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির সাথে সাথে কিভাবে কর্মসংস্থান তৈরি করা যায়। নির্বাচনের পরে মোদি সেই একই ধাঁধার উত্তর খুঁজে চলেছেন। যদিও বর্তমানে প্রধানমন্ত্রীর গদিতে তার অবস্থান খুব একটা স্বস্তিদায়ক নয়। তিনি এমন একটি দলের প্রধান যেটিকে নির্বাচনে শায়েস্তা করা হয়েছে, ক্ষমতা বজায় রাখার জন্য তিনি জোট সরকার গঠন করতে বাধ্য হয়েছেন।
মোদির কর্তৃত্ব তার জোটের শরিকদের মধ্যে জটিলতার কারণে সীমাবদ্ধ হতে পারে। তিনি একচেটিয়া ক্ষমতা হাতে রেখেও ভারতের সবচেয়ে গভীর অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জের সমাধান করতে পারেননি। এখন তিনি একজন দুর্বল নেতা যাকে শরিকদের স্বার্থের ভারসাম্য বজায় রাখতে হবে, জীবনযাত্রার মান উন্নত করার কোনো সুস্পষ্ট উপায় তার সামনে নেই। মোদি প্রশাসনের সাবেক প্রধান অর্থনৈতিক উপদেষ্টা অরবিন্দ সুব্রামানিয়ান, যিনি এখন ওয়াশিংটনের পিটারসন ইনস্টিটিউট ফর ইন্টারন্যাশনাল ইকোনমিক্সের সিনিয়র ফেলো, তিনি বলেছেন, ‘গত চার, পাঁচ বছরে কর্মসংস্থানের গতি দুর্বল হয়েছে। এর মধ্যে আপনি কীভাবে আরও চাকরি তৈরি করবেন? এটি সত্যিই ভারতের কেন্দ্রীয় অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জ, আমি মনে করি সরকারের সামনে সমাধানের বড় কোনো সুযোগ নেই।’

মোদির দলের প্রতি জনগণের হতাশা বাড়ছে। কয়েক মিলিয়ন মানুষের দেশ ভারতে বাড়ছে অর্থনৈতিক বিপদ, সেইসাথে সম্পদের বিস্ময়কর বৈপরীত্য আরো প্রকট হচ্ছে।
বড় বড় শহরগুলোতে, পাঁচতারা হোটেলগুলো তাদের নজরকাড়া স্পা নিয়ে গর্ব করে, অন্যদিকে বস্তিগুলোকে উপেক্ষা করা হয়। গ্রামীণ এলাকার মানুষ অপুষ্টির সাথে লড়াই করছে। শিশুদের স্কুলে পাঠানোর অর্থ জোগাড় করতে গিয়ে তাদের নাভিশ্বাস উঠছে।
মুম্বাইয়ের একটি স্বাধীন গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর মনিটরিং ইন্ডিয়ান ইকোনমি অনুসারে, যদিও ভারতের কর্মজীবী জনসংখ্যার সংখ্যা প্রায় এক বিলিয়ন, এর মধ্যে ভারতে মাত্র ৪৩০ মিলিয়ন চাকরি রয়েছে। যাদের কর্মরত হিসাবে গণনা করা হয় তাদের বেশিরভাগই দিনমজুর এবং খামারের শ্রমিক, নির্ভরযোগ্য মজুরি এবং সরকারি কর্মক্ষেত্রের সুরক্ষার অভাব হিসাবে তাদের জীবন অনিশ্চিত পরিস্থিতিতে আটকে আছে।
উন্নত জীবনযাত্রা অনেক শহরেই স্পষ্ট। দিগন্ত ছোঁয়া উঁচু অ্যাপার্টমেন্ট থেকে শুরু করে শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত শপিংমল এবং বিলাসবহুল গাড়িতে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে রাস্তায়। দেশের দক্ষিণে এবং রাজধানী নয়াদিল্লির আশেপাশে প্রযুক্তি কেন্দ্রগুলোতে কাজ করা পেশাদাররা যথেষ্ট অগ্রগতি উপভোগ করেছেন। একটি দ্রুত বর্ধনশীল দেশীয় অটো শিল্প তুলনামূলকভাবে উচ্চ বেতনের চাকরির উৎস তৈরি করেছে। এশিয়ার অন্যতম ধনী ব্যক্তি গৌতম আদানির মতো বিজনেস ম্যাগনেটরা মোদির সাথে তাদের সম্পর্ক এবং ভাগ্যের জোড়ে সমস্ত প্রতিবন্ধকতা দূর করে নিজেদের ব্যবসায়িক সাম্রাজ্যকে উন্নত করেছেন। কিন্তু বেশিরভাগ ভারতীয় কর্মী যারা তথাকথিত অনানুষ্ঠানিক খাতে কর্মরত তারা কার্যকরভাবে বিপর্যস্ত-রাস্তার ধারের স্টলে, ছোট দোকানে যারা কাজ করেন তাদের আয়ের কোনো নিশ্চয়তা বা অগ্রগতির সম্ভাবনা নেই।
সাম্প্রতিক দশকগুলোতে পূর্ব এশিয়ায় উৎপাদন খাতে উত্থানের গল্প আমরা জানি, কিন্তু তা সত্ত্বেও কর্মসংস্থানের অভাবে ভারত সেই উত্থান থেকে বঞ্চিত। দক্ষিণ কোরিয়া, চীন থেকে থাইল্যান্ড, ইন্দোনেশিয়া এবং ভিয়েতনাম পর্যন্ত কয়েক মিলিয়ন মানুষ কারখানায় অর্জিত মজুরির মাধ্যমে দারিদ্র্য থেকে রক্ষা পেয়েছে। স্বয়ংসম্পূর্ণতার উপর ফোকাস, আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের প্রতি ঘৃণা এবং বিনিয়োগকে নিরুৎসাহিত করা আমলাতন্ত্রের কারণে ভারত সেই রূপান্তরের শরিক হতে পারেনি।
অর্থনীতিবিদ সুব্রামানিয়ান বলেছেন, ‘সমগ্র উৎপাদন খাত ভারতকে বাইপাস করেছে। উন্নয়নের ক্ষেত্রে এটি সেই বৃহত্তর ব্যর্থতা যা ভারতকে ক্রমাগত তাড়া করে বেড়াচ্ছে।’
মোদি উৎপাদনকে জোরদার এবং রপ্তানি বাড়ানোর লক্ষ্যে উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন। বন্দরগুলোকে সুগম করেছেন, প্রশাসনিক প্রবিধানকে সহজ করেছেন। কিছু হাই-প্রোফাইল উন্নয়ন, ভারতের বাজারে অ্যাপল আইফোনের দৃশ্যমান উপস্থিতি সত্ত্বেও বিশ্বব্যাংকের তথ্য অনুসারে, উৎপাদন দেশের অর্থনীতির মাত্র ১৩ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। এটি এক দশক আগের তুলনায় কম, যখন মোদি ক্ষমতা গ্রহণ করেছিলেন।
শেয়ারের দাম বহুগুণ করে, বিদেশী অর্থ ভারতের স্টক মার্কেটে প্রবাহিত হয়েছে, যা মোদির ব্যবসা-প্রতিষ্ঠানের একটি মূল উপাদান। কিন্তু আন্তর্জাতিক বিনিয়োগকারীদের ভারতীয় কোম্পানিগুলোতে সরাসরি অর্থ দেয়ার জন্য প্ররোচিত করা- একটি ঝুঁকিপূর্ণ বাজি হিসেবে প্রতিপন্ন হয়েছে। মোদির হিন্দু জাতীয়তাবাদী দল মুসলিমদের কোণঠাসা করে সামাজিক উত্তেজনা বাড়িয়ে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরি করেছে।
এই নির্বাচন অতিরিক্ত বিনিয়োগকে আরও নিরুৎসাহিত করতে পারে, কারণ মোদির সম্ভবত ব্যবসা সংক্রান্ত স্থবির সংস্কারগুলো পাস করা আরও কঠিন হবে। যার মধ্যে জমি সংগ্রহ করা বা ভাড়া করা এবং শ্রমিকদের নিয়োগ সংক্রান্ত আইন সম্পৃক্ত। অর্থনৈতিক গতিশীলতার দিকে কোনও সুস্পষ্ট পথ না থাকায় এবং আরও চ্যালেঞ্জিং রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে, মোদি হয়তো সমর্থন জোগাড় করার ক্ষেত্রে ধীরে চলো নীতি নেবেন। তিনি সামাজিক কল্যাণমূলক কর্মসূচি প্রসারিত করতে পারেন, প্রয়োজনে সম্প্রদায়ের কাছে আরও নগদ হস্তান্তরের জন্য সরকারি কোষাগার ব্যবহার করবেন। এই ধরনের একটি পদক্ষেপ সম্ভাব্যভাবে সরকারের কর্মসূচির অগ্রগতির জন্য উপলব্ধ তহবিল হ্রাস করতে পারে- যার মধ্যে হাইওয়ে, বন্দর, বিমানবন্দর এবং অন্যান্য অবকাঠামোর নির্মাণ জড়িত। এই পরিকল্পনাগুলো ভারতের শক্তিশালী অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি বজায় রাখার জন্য এবং উৎপাদনে বিনিয়োগকে উৎসাহিত করার জন্য বিস্তৃত প্রচারণার কেন্দ্রবিন্দু।
কেউ কেউ আশঙ্কা করছেন যে, অর্থের বিক্ষিপ্তকরণের জেরে কর্মসংস্থানের দীর্ঘমেয়াদী প্রকল্প দুর্বল হতে পারে। গ্লোবাল ডেটা টিএস লম্বার্ড-এর প্রধান ভারতীয় অর্থনীতিবিদ সুমিতা দেবেশ্বরের মতে, ‘আপনাকে নিশ্চিত করতে হবে যে, অর্থনৈতিক উন্নয়নের সুফল সর্বাধিক সংখ্যক মানুষের কাছে পৌঁছাবে, মানুষ যদি অর্থনৈতিক উন্নয়নের সুবিধা না পায়, তবে এটি মূলত স্থবিরতা সৃষ্টি করে।’
ভূ-রাজনৈতিক পরিবর্তন ভারতের উৎপাদন খাতে একটি নতুন মাত্রা যোগ করেছে। যেহেতু মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং চীন বাণিজ্য শত্রুতায় জড়িত, বহুজাতিক ব্র্যান্ডগুলো তাদের পণ্য তৈরির জন্য চীনা কারখানার উপর নির্ভরতা কমাতে চাইছে। ওয়ালমার্টের মতো বড় খুচরা বিক্রেতারা চীনের বিকল্প হিসেবে ভারতকে ক্রমবর্ধমানভাবে খুঁজছে।
কিন্তু সম্ভাব্য বিনিয়োগের চাহিদাগুলোকে ধরে রাখার জন্য হাইওয়ে, রেল সংযোগ এবং বন্দরগুলোর আপগ্রেডিং অব্যাহত রাখা এবং কারখানার কাজ করার জন্য লোকেদের প্রয়োজনীয় দক্ষতা বাড়াতে বৃত্তিমূলক প্রশিক্ষণের উপর ফোকাস করা প্রয়োজন। এমনকি নির্বাচনের আগে, সন্দেহ ছিল যে মোদির প্রশাসন এই বিষয়গুলো উপলব্ধি করার জন্য যথেষ্ট দ্রুত অগ্রসর হচ্ছে। দেবেশ্বর বলেছেন, ‘ভূ-রাজনীতির দিক থেকে চীনের পাল্টা হিসেবে আমরা ভারতে বিনিয়োগের কিছু প্রবাহ দেখতে পাব। কিন্তু এই সুযোগগুলোর জন্য ভারত যে পদক্ষেপ করছে তা যথেষ্ট বড় মাপের নয়।’
Related News

নিউইয়র্কে বাংলাদেশ স্ট্রিট’ নামে সড়কের উদ্বোধন !
নিউইয়র্কের একটি সড়কের নাম করণ করা হলো বাংলাদেশের নামে। ‘বাংলাদেশ স্ট্রিট’ নামে এই সড়কটির নাম ফলক রবিবার উদ্বোধন করা হয়। জ্যাকসন হাইটসের এই সড়কের নাম করণ অনুষ্ঠানে বিপুল সংখ্যক প্রবাসীর পাশাপাশি স্থানীয়দের ভিড় জমে।
স্থানীয় সময় রবিবার দুপুর ২টায় বাংলাদেশ স্ট্রিটের নামফলক উম্মোচন করেন জ্যাকসন হাইটস ও এলমহার্স্ট এলাকার নবনির্বাচিত সিটি কাউন্সিলম্যান উপ-মহাদেশীয় বংশোদ্ভূত শেখর কৃষ্ণান।

এসময় জ্যাকসন হাইটস বাংলাদেশি বিজনেস অ্যাসোসিয়েশনের (জেবিবিএ) সাবেক ও বর্তমান কর্মকর্তা, বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠনের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
বাংলাদেশ স্ট্রিটের নামফলক উম্মোচন অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন নিউ ইয়র্কের কংগ্রেসওমেন গ্রেস মেং, অ্যাসেম্বলিওম্যান ক্যাটালিনা ক্রুজ, স্টিভেন রাঘাব, কাউন্সিল মেম্বার জেসিকা গঞ্জালেজ-রোজাস, অ্যাসেম্বলিম্যান স্টিভেন রাগা, কাউন্সিল মেম্বার লিন্ডা লি, জেবিবিএর বর্তমান সভাপতি হারুন ভূঁইয়া ও সাধারণ সম্পাদক ফাহাদ সোলায়মান, অপর জেবিবিএর সভাপতি গিয়াস আহমেদ, সাধারণ সম্পাদক তারেক হাসান খানসহ শত শত বাংলাদেশি।

উল্লেখ্য, নিউ ইয়র্ক প্রবাসী বাংলাদেশিদের দীর্ঘদিনের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে গত ১৬ ফেব্রুয়ারি কাউন্সিলম্যানদের সাধারণ সভায় ‘বাংলাদেশ স্ট্রিট’ নামকরণের সিদ্ধান্ত গ্রহণের উদ্যোগ নিলে পরে ৪৭-০ ভোটে তা পাস হয়। সেই থেকে জ্যাকসন হাইটসের ৩৭ এভিনিউয়ের ৭৩ স্ট্রিটের নামকরণ করা হয় ‘বাংলাদেশ স্ট্রিট’। বিলটির সিদ্ধান্ত নম্বর হলো- আইএনটি ৮৯৭।
নিউইয়র্কের বাংলাদেশি অধ্যুষিত জ্যাকসন হাইটসে ‘বাংলাদেশ’ নামে সড়ক করার জোর তৎপরতা চালান জেবিবিএর সাবেক ও বর্তমান কর্মকর্তারা।
জানা যায়, গত ১৬ ফেব্রুয়ারি নিউ ইয়র্ক সিটির ১২৯টি স্ট্রিটের পুনর্নামকরণের বিলটি সভায় আলোচনায় আসে। এক এক করে ১২৯টি স্ট্রিটের নতুন নামকরণের প্রস্তাব শোনানো হয়। পাঁচ বরোতেই নতুন নামকরণ করা হয়েছে বিভিন্ন স্ট্রিটের বা এভিনিউয়ের। এসব নামকরণ করা হয়েছে বিভিন্ন কমিউনিটির নিজ দেশের বা বিশিষ্ট ব্যক্তির নামে। নিউ ইয়র্ক সিটিতে বাংলাদেশি প্রবাসীদের সবচেয়ে বড় ব্যবসাকেন্দ্র ও সাংস্কৃতিক প্রাণকেন্দ্র জ্যাকসন হাইটসের ৭৩ স্ট্রিটের এক ব্লকের নামকরণ করা হলো ‘বাংলাদেশ স্ট্রিট’।

ভারতের প্রভাবে নমনীয়তা হাস্যকর, যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থানে কোন পরিবর্তন নেই: ডনাল্ড লু
বাংলাদেশে গণতন্ত্র ও মানবাধিকার প্রশ্নে যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান অপরিবর্তিত থাকবে বলে জানিয়েছেন সদ্য ঢাকা সফর করে যাওয়া দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়াবিষয়ক মার্কিন সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডনাল্ড লু। বুধবার মধ্যরাতে ঢাকা ছেড়ে যাওয়ার কয়েক ঘণ্টা আগে দেশের একটি পত্রিকা এবং একটি বেসরকারি টেলিভিশনকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি যুক্তরাষ্ট্রের এই অবস্থান পুনর্ব্যক্ত করেন। সাক্ষাৎকারে ভারতের মধ্যস্থতা বা তাদের প্রভাবে প্রভাবিত হয়ে ০৭ই জানুয়ারি অনুষ্ঠিত দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র তাদের অবস্থান নরম করেছে, বিএনপি নেতাদের এমন অভিযোগও উড়িয়ে দেন, এমন দাবিকে হাস্যকর বলে মন্তব্য করেন তিনি। সেই সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশকে ভারতের চোখে দেখে বলে এ অঞ্চলে যে ধারণা বিদ্যমান সেটাও খণ্ডনের চেষ্টা করেন লু। বলেন, বাংলাদেশে নিজ স্বার্থ, নিজস্ব বিবেচনা বা দৃষ্টিকোণ দিয়ে দেখে যুক্তরাষ্ট্র। ভারত, চীন কিংবা রাশিয়ার স্বার্থের দৃষ্টিকোণ দিয়ে নয়। তিনি বলেন, বাংলাদেশি বন্ধুদের সঙ্গে আমরা সরাসরি আলোচনা করি। তবে এটাও সত্য যে, যুক্তরাষ্ট্র ও ভারতের মধ্যে আলোচনা হয় এ অঞ্চলের পরিস্থিতি নিয়ে। সেই আলোচনায় শ্রীলঙ্কা, নেপাল, মালদ্বীপ- কখনো কখনো বাংলাদেশ প্রসঙ্গও থাকে।
প্রথম আলো এবং ইনডিপেনডেন্ট টিভিকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের জ্যেষ্ঠ এই কর্মকর্তা র্যাবের ওপর নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার, বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি, গাজায় ফিলিস্তিনিদের ওপর ওপর নৃশংসতার বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ছাত্র বিক্ষোভ, বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্কের ভবিষ্যৎ, এই অঞ্চলে চীনের ক্রমবর্ধমান প্রভাবসহ নানা বিষয়ে কথা বলেন।সাক্ষাৎকারে তিনি কিছু বিষয় খোলাসা করে জানান।
৭ই জানুয়ারির নির্বাচনকে ঘিরে বাংলাদেশের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্কে মতপার্থক্য তৈরি হয়েছিল, তা পাশে সরিয়ে যুক্তরাষ্ট্র সামনে এগিয়ে যেতে চায়। এক প্রশ্নের জবাবে লু বলেন, নির্বাচনে সহিংসতা ও ভোটারদের ওপর বলপ্রয়োগ করায় আমরা পুলিশ, সরকারি ও বিরোধী দলের নেতাদের ওপর ভিসা নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছিলাম। আমরা আওয়ামী লীগ ও বিএনপিকে অর্থপূর্ণ সংলাপে বসতে বলেছিলাম। আমরা সভা-সমাবেশ ও বাকস্বাধীনতার পক্ষে সোচ্চার ছিলাম। এটা খুবই স্বাভাবিক। সব অঞ্চলেই আমরা এমন করি। বাংলাদেশে এসব মূল্যবোধ বজায় রাখতে আমরা কাজ করে যাব।
তিনি বলেন, আমাদের সম্পর্কের মাঝে অনেক জটিল বিষয় রয়েছে। গত বছর নির্বাচন নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে অনেক উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছিল, এটা তো এখন আর গোপন নয়। র্যাবের নিষেধাজ্ঞা নিয়ে আমরা কাজ করছি। আমরা সামগ্রিক মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করছি। ব্যবসার পরিবেশ উন্নয়ন নিয়েও কথা বলেছি। বিষয়গুলো তো জটিল। যেমন শ্রম অধিকারের মতো বিষয়ে আমরা দীর্ঘদিন ধরে কাজ করে যাচ্ছি। এতে অগ্রগতি খুব ধীরগতির। এ ক্ষেত্রে অগ্রগতিতে সময় লাগে।
বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে আলোচনায় বলেছি, জটিল বিষয়ের পাশাপাশি আমরা সহযোগিতার নতুন ক্ষেত্র খুঁজবো। ইতিবাচক অ্যাজেন্ডা নিয়ে কাজ করবো। যেমন যুক্তরাষ্ট্রে যদি বাংলাদেশের শিক্ষার্থীর সংখ্যা বাড়ানো হয়, ক্রমবর্ধমান হারে ব্যবসা ও বিনিয়োগ হয়, পরিবেশবান্ধব জ্বালানির জন্য পথ তৈরি করা যায়, যাতে বাংলাদেশের পরিবেশের উন্নতি হয় আর অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি ত্বরান্বিত করা যায়; আমরা যদি এ বিষয়গুলো করতে পারি, তবে জটিল বিষয়গুলো সমাধানের পথ আমাদের জন্য সহজ হয়ে যাবে।
র্যাবের বিরুদ্ধে বিদ্যমান মার্কিন নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের কোনো অগ্রগতি আছে কি-না? জানতে চাইলে ডনাল্ড লু বলেন, র্যাবের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা এখনো বহাল আছে। এক বছর আগে বাংলাদেশ সফরের সময় র্যাবের বিষয়ে হিউম্যান রাইটস ওয়াচের প্রতিবেদনের প্রসঙ্গ তুলেছিলাম। হিউম্যান রাইটস ওয়াচ গত বছর তাদের প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছিল, র্যাবের হাতে বিচারবহির্ভূত হত্যা ও গুম নাটকীয়ভাবে কমে গেছে। এটা বিরাট ঘটনা। এটা অবশ্যই ভালো অগ্রগতি উল্লেখ করেই বলতে চাই, আমাদের এখনো উদ্বেগ রয়ে গেছে। আমরা দেখছি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অন্য বিভাগের সদস্যরা এসব অপরাধ করে চলেছেন। র্যাবের অতীতের অপরাধের জবাবদিহি নিশ্চিত করা হচ্ছে কি না, সেটাও আমরা দেখতে চাই। এ বিষয়গুলো কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ। আমরা জানি যে বাংলাদেশ সরকারের (র্যাবের নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার) প্রক্রিয়া নিয়ে ধৈর্যের অভাব আছে। গত বছর বিচারবহির্ভূত হত্যা ও গুম নাটকীয়ভাবে কমে যাওয়ার মাধ্যমে এটা প্রমাণিত যে, র্যাব মানবাধিকার লঙ্ঘন না করেই আইনশৃঙ্খলা রক্ষার অর্পিত দায়িত্ব পালন করতে পারে।
এক প্রশ্নের জবাবে লু বলেন, বাংলাদেশে মানবাধিকার নিয়ে সমস্যা দেখা দিলে আমরা সেটি নিয়ে কথা বলি। কারণ, বাংলাদেশ আমাদের সহযোগী। আমাদের কোনো সমস্যা দেখলেও বাংলাদেশ তা খোলামনে বলতে পারে। লু বলেন, যুক্তরাষ্ট্রে বিক্ষোভ দমনকালে পুলিশের অতি উৎসাহী পদক্ষেপ থাকলে তা অবশ্যই তদন্তে ধরা পড়বে। পুলিশ অতি উৎসাহী কাজ করলে তাকে অবশ্যই বিচারের আওতায় আনা হবে। গণতন্ত্রে এটাই হয়।

বিচারের মুখোমুখি হচ্ছে বেতন না দেওয়া মালয়েশিয়ান কোম্পানিগুলো
মালয়েশিয়া এবার বাংলাদেশি কর্মীদের স্বার্থ রক্ষায় বেশ সোচ্চার হয়েছে। বিচারের মুখোমুখি হতে যাচ্ছে বাংলাদেশি কর্মীদের বেতন না দেওয়া মালয়েশিয়ান কোম্পানি, মুলিয়াওন এনার্জি এসডিএন বিএইচডিকে। সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হওয়া মালয়েশিয়ায় মিছিল করা প্রায় সাত শতাধিক বাংলাদেশি কর্মীদের ক্ষতিপূরণ দিতে ব্যর্থ হওয়া এবং শ্রম আইন লঙ্ঘন করার দায়ে দেশটির ডেপুটি পাবলিক প্রসিকিউটর উক্ত কোম্পানির কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন
এর আগে গত ৫ ফেব্রুয়ারি জাবাতান তেনাগা কেরজা সেমেনানজুং মালয়েশিয়া (জেটিকে) কর্মকর্তারা উক্ত কোম্পানির নিয়োগকর্তা ও কর্মচারীদের উপস্থিতিতে শ্রম আদালত ৭৩৩ জন বাংলাদেশি শ্রমিকের নিয়োগকর্তাকে ১ কোটি ৩৫ লাখ ৫৫৭ মিলিয়ন রিঙ্গিত বকেয়া বেতন পরিশোধ করার নির্দেশ দেন।
দেশটির অনলাইন, মালয় মেইল জানিয়েছে, চাকরির দিয়ে বাংলাদেশি কর্মীদের মালয়েশিয়ায় নিয়ে এসে অমানবিক পরিস্থিতিতে ফেলে দেশটির জোহর রাজ্যের পেঙ্গেরাংয়ের একটি কোম্পানি। মুলিয়াওন এনার্জি এসডিএন বিএইচডি নামের ওই কোম্পানিটি ভুয়া চাকরি দেখিয়ে সে দেশে কর্মী নিয়েছে। পরে মালয়েশিয়ার জোহর অঞ্চলের শ্রম আদালতে অভিযোগ দায়ের করলে অর্ধেক বেতন পরিশোধের শর্তে বিরোধ নিষ্পত্তি করতে রাজি হয়েছিল কোম্পানিটি।
এদিকে, গত বছরের অক্টোবর থেকে বেকার দিনযাপন করা এই কর্মীরা বাকি অর্ধেক বেতন কবে নাগাদ পাবে, সেই নিশ্চয়তা এখন পর্যন্ত পাওয়া যায়নি। তবে ১০ ফেব্রুয়ারির মধ্যে তাদের কর্মসংস্থান নিশ্চিতের নির্দেশও দিয়েছিলেন আদালত।
কিছু মালয়েশিয়ান কোম্পানি বাংলাদেশি প্রবাসী কর্মীদের বেতন দিতে ব্যর্থ হলে এই বছরের শুরুতে ৭৩০ জনেরও বেশি বাংলাদেশি কর্মী দশটি দলে ভাগ হয়ে দেশটির ডিপার্টমেন্ট অব লেবারে অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগের ভিত্তিতে নিয়োগদানকারী কোম্পানিকে বেতনের বিষয়টি সুরহার নির্দেশ দেয় সংশ্লিষ্ট দপ্তর। সেই নির্দেশনা মোতাবেক প্রায় ১ মিলিয়ন রিঙ্গিত বাংলাদেশি কর্মীদের পাওয়ার কথা ছিলো কিন্তু এ পর্যন্ত কোনো টাকাই পরিশোধ করেনি কোম্পানির মালিক পক্ষ।
দেশটির লেবার ডিপার্টমেন্টের সংশ্লিষ্ট সূত্রের বরাতে গত বৃহস্পতিবার, কয়েকটি স্থানীয় সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনে জানিয়েছে, অভিযোগকারীদের উপর আনীত অভিযোগের ভিত্তিতে ১০টি ফাইল খোলা হয়েছিলো, যার মধ্য থেকে ৬টি ফাইলের ব্যাপারে অগ্রগতি জানতে চেয়েছেন দেশটির ডেপুটি পাবলিক প্রসিকিউটর।
ডিরেক্টর-জেনারেল অফিসে এ কেইসের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র দেশটির সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছে যে, যে প্রক্রিয়ায় বিষয়গুলো এগোচ্ছে তাতে এটা নিশ্চিত যে, এই কোম্পানিগুলো শাস্তির মুখোমুখি হতে যাচ্ছে। তবে এ ব্যাপারে স্থানীয় সংবাদমাধ্যমগুলো যোগাযোগ করলে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হয়নি উক্ত কোম্পানি কর্তৃপক্ষ।
এদিকে, দেশটির মানবসম্পদ মন্ত্রী স্টিভেন সিম গত ফেব্রুয়ারিতে ৭৩৩ বাংলাদেশি কর্মী এবং নিয়োগকারী ফার্মের মধ্যে মধ্যস্থতার নির্দেশকে একটি ল্যান্ডমার্ক কেস হিসেবে বর্ণনা করে বিদেশি কর্মী নিয়োগ ব্যবস্থা থেকে লাভবান শিল্পগুলোকে একটি শক্তিশালী বার্তা দেবে বলে আশা করেছিলেন। সেই সময় তিনি আরো বলেছিলেন, নিয়োগকর্তারা যদি দোষী সাব্যস্ত হন তবে তাদের ব্লক লিস্টেড করা হবে এবং বিদেশি শ্রমিক নিয়োগে তাদের কোটা বাতিল করা হবে।
এদিকে, মাইগ্রান্ট রাইটসের কর্মীরা এ বিবৃতির সমালোচনা করে বলেছিলেন যে, মধ্যস্থতার এ নির্দেশ বিদেশি কর্মী নিয়োগের নামে মানব পাচারের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় শক্তিশালী পদক্ষেপ নেওয়ার ক্ষেত্রে যথেষ্ট নয়।
তবে, মানব পাচারের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে যৎসামান্য চেষ্টার জন্য মালয়েশিয়া বরাবরই সমালোচিত হয়ে আসছে।

পোপের আমন্ত্রণে মানব ভ্রাতৃত্বের জন্য দ্বিতীয় বিশ্বসভায় ড. ইউনূস
ভ্যাটিকান সিটিতে আয়োজিত মানব ভ্রাতৃত্বের জন্য দ্বিতীয় বিশ্বসভার জন্য জড়ো হয়েছিলেন,ত্রিশজন নোবেল শান্তি পুরস্কার বিজয়ী, বিজ্ঞানী, অর্থনীতিবিদ, মেয়র, ডাক্তার, ব্যবস্থাপক কর্মী, ক্রীড়া চ্যাম্পিয়ন এবং সাধারণ নাগরিক! ১০ থেকে ১১ই মে পরিবেশ, শিক্ষা, ব্যবসা, কৃষি, মিডিয়া এবং স্বাস্থ্যে মানব ভ্রাতৃত্বের প্রচারের উপায় নিয়ে আলোচনা করতে বিশ্বসভায় দু’টি গুরুত্বপূর্ণ অধিবেশনে শান্তিতে নোবেল বিজয়ী অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস এবং শান্তিতে নোবেল বিজয়ী গুয়েতেমালা থেকে ড. রিগোবার্তা মেনচু তুম সভাপতিত্ব করেন।
গোলটেবিল আলোচনার সূচনা করে ভ্যাটিকানের সেক্রেটারি অফ স্টেট কার্ডিনাল পিয়েত্রো প্যারোলিন বলেন, মানুষ যখন শান্তিকে অসম্মান করে এবং যুদ্ধ চালায়, তারা নিজেদের জন্য এমন একটি দিক নির্ধারণ করে যা সৃষ্টির বিরোধিতা করে। এবং মানুষকে হত্যা করে তারা কেবল অন্যদের মর্যাদাকে আঘাত করে না বরং নিজেদেরও সম্মানহানি করে।

অনুষ্ঠানের শান্তি গোলটেবিল বৈঠক থেকে আনুষ্ঠানিক ঘোষণায় গাজায় অবিলম্বে যুদ্ধবিরতি, হত্যা বন্ধ করতে এবং মানবিক সহায়তার নিরাপদ ও অনিয়ন্ত্রিত প্রবেশাধিকার নিশ্চিত করার জন্য আহ্বান জানানো হয়।উল্লেখ করা হয়েছে, আমরা আন্তর্জাতিক সমপ্রদায়কে একটি ইসরাইল এবং একটি ফিলিস্তিনের দ্বি-রাষ্ট্র সমাধানের পাশাপাশি জেরুজালেম শহরের জন্য আন্তর্জাতিকভাবে নিশ্চিত বিশেষ মর্যাদাকে দৃঢ়তার সঙ্গে অনুসরণ করার আহ্বান জানাচ্ছি যাতে ইসরাইলি এবং ফিলিস্তিনিরা অবশেষে শান্তি এবং নিরাপত্তায় বসবাস করতে পারে।
ড. মুহাম্মদ ইউনূস মন্তব্য করেন যে, অর্থনৈতিক ও সামাজিক কাঠামো তৈরির সময় মানুষ নিজেদের সম্পর্কে যেভাবে চিন্তা করে তা মানবতার জন্য অস্ত্রের চেয়েও বেশি বড় হুমকি। আমাদের ভাগ করে নেয়া এবং যত্ন নেয়ার মানবিক মূল্যবোধের সঙ্গে মানুষ হিসেবে নিজেদেরকে নতুন করে আবিষ্কার করতে হবে এবং আমাদের অর্থনৈতিক ও সামাজিক কাঠামোর ভিত্তি তৈরি করতে হবে যা তিনটি শূন্যের একটি নতুন সভ্যতা-শূন্য বিশ্ব উষ্ণায়ন, শূন্য সম্পদ কেন্দ্রীয়করণ এবং শূন্য বেকারত্ব তৈরি করতে নিজেদেরকে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ করে। এটা আমাদের করতে হবে আমাদের অর্থনৈতিক কাঠামোতে সামাজিক ব্যবসার ধারণা এবং অনুশীলনকে দৃঢ়ভাবে প্রতিষ্ঠিত করার মাধ্যমে। ড. ইউনূস বিশেষ করে বর্তমান সভ্যতার ‘মুনাফা সর্বোচ্চকরণ’ নীতি যার মাধ্যমে একটি ক্রমাগত প্রক্রিয়া হিসেবে মানুষকে ‘চাকরি সন্ধানকারী’ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছে। তার কারণে মুষ্টিমেয় মুনাফা অর্জনকারীদের তাদের সম্পদ ক্রমাগতভাবে আকাশচুম্বী করে যাচ্ছে।
গুয়েতেমালান আদিবাসী ১৯৯২ সালের নোবেল শান্তি পুরস্কার বিজয়ী রিগোবার্তা মেঞ্চু তুম বর্তমান সমাজের বস্তুগত, সামাজিক এবং আধ্যাত্মিক অবক্ষয়ের সমালোচনা করেন এবং জোর দিয়েছেন যে, সম্পূর্ণ মানুষ হওয়ার জন্য আমাদের আত্মাকে লালন করার মতো মানুষের প্রয়োজন। অংশগ্রহণকারীরা ১১ই মে একটি একান্ত সভায় পোপ ফ্রান্সিসের সঙ্গে দেখা করেন।
