Site Logo

Headlines

কল্যাণ রাষ্ট্র হিসেবে বাংলাদেশকে গড়ার মহান স্বপ্ন নিয়ে কাজ করছে জামায়াত -ডা. শফিকুর রহমান

কল্যাণ রাষ্ট্র হিসেবে বাংলাদেশকে গড়ার মহান স্বপ্ন নিয়ে কাজ করছে জামায়াত -ডা. শফিকুর রহমান

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, ‘জামায়াতে ইসলামীর নেতাকর্মীদের দুর্বল অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়াতে হবে। কোন ভয়-ভীতির তোয়াক্কা না করে সংগঠনের কাজকে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে। আল্লাহ দ্বীনকে বিজয়ী করতে ইসলামী আন্দোলনের কর্মীদের সর্বোচ্চ ত্যাগ স্বীকার করতে হবে। আমাদের দাওয়াত হচ্ছে মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামিনকে এক রব এবং রাসুলকে (সা) আমাদের নেতা মানার দাওয়াত। কুরআন ও সুন্নাহ’র আলোকে বাংলাদেশে একটি কল্যাণ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার মহান স্বপ্ন নিয়ে জামায়াত কাজ করছে। ইনশাআল্লাহ আমরা এই কাজে একদিন সফল হব।’

সোমবার বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী চট্টগ্রাম মহানগরী আয়োজিত থানা ও ওয়ার্ড দায়িত্বশীল শিক্ষাশিবির-২০২৪-এ প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় মজলিশে শূরা সদস্য, চট্টগ্রাম মহানগরী আমির ও সাবেক এমপি শাহজাহান চৌধুরীর সভাপতিত্বে ও কেন্দ্রীয় মজলিশে শূরা সদস্য, চট্টগ্রাম মহানগরী সেক্রেটারি অধ্যক্ষ মুহাম্মদ নুরুল আমিনের সঞ্চালনায় শিক্ষাশিবিরে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান, মাওলানা আবদুল হালিম ও মাওলানা মুহাম্মদ শাহজাহান।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে আমিরে জামায়াত ডা. শফিকুর রহমান বলেন, ‘দায়িত্বশীলদের অনুপ্রেরণা প্রদান করে টিমস্পিরিটের মাধ্যমে সকলকে নিয়ে সংগঠনকে আরো মজবুত করতে হবে। সংগঠনের থানা ও ওয়ার্ড অর্থাৎ স্থানীয় কার্যক্রম যত বেশি শক্তিশালী হবে, সামগ্রিকভাবে মহানগরী ও কেন্দ্রীয় সংগঠন ততো সুদৃঢ় হবে। যেখানে যত বেশি বিপর্যয় এসেছে সেখানে দ্বীনের দাওয়াত আরো ব্যাপকতর হয়েছে। ফলে কোনো ষড়যন্ত্র ও রাজনৈতিক বাঁধা দেখে ভয় পাওয়া বা হতাশ হওয়া অথবা কাজ কমিয়ে দেয়া ইসলামী আন্দোলনের কর্মীদের জন্য উচিৎ নয়।’

তিনি বলেন, ‘মানবজীবনের এমন কোনো সমস্যা নেই যার সমাধান ইসলামে দেয়া হয়নি। মানবজাতির জন্য সব ধরনের সমস্যার সমাধান হলো আল কুরআন। আমাদের প্রত্যেককে পবিত্র কুরআনের বিধান অনুযায়ী নিজেদের জীবনকে সাজাতে হবে। এজন্য আমাদের প্রত্যেককে প্রতিদিন বেশি বেশি কুরআন, হাদীস ও ইসলামী সাহিত্য অধ্যয়ন করা দরকার। একই সাথে ইসলামের দাওয়াত পৌঁছাতে হবে প্রতিটি ঘরে ঘরে। তাহলেই ইসলামের বিজয় অনিবার্য হয়ে উঠবে।’

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান বলেন, ‘যোগ্যতা যাদের আছে আল্লাহ তায়ালা নেতৃত্ব তাদের হাতেই দেন। এটাই আল্লাহর বিধান। নিজেদেরকে জনগণের খেদমতের জন্য তৈরি করে আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন করাই বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী তার লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে।’

সভাপতির বক্তব্যে কেন্দ্রীয় মজলিশে শূরা সদস্য, চট্টগ্রাম মহানগরী আমির ও সাবেক এমপি শাহজাহান চৌধুরী বলেন, ‘তৃণমূল পর্যায়ে আমাদেরকে সংগঠন মজবুতির দিকে গুরুত্ব দিতে হবে। মনে রাখবেন, সংগঠন মজবুত থাকলে যেকোনো সময়ে যেকোনো সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন সম্ভব। পাশাপাশি এই সেশনে সকল বিভাগের পরিকল্পনা বাস্তবায়নে সকল নেতাদেরকে সচেষ্ট হতে হবে।’

জলবায়ু তহবিল বাংলাদেশের ওপর ঋণের বোঝা বাড়াচ্ছে: টিআইবি

জলবায়ু তহবিল বাংলাদেশের ওপর ঋণের বোঝা বাড়াচ্ছে: টিআইবি

গত এক দশকে সবুজ জলবায়ু তহবিলের (গ্রিন ক্লাইমেট ফান্ড - জিএসএফ) ভূমিকা বেশ হতাশাজনক। অনুদানের বিপরীতে অধিক পরিমাণ ঋণ প্রদানের জন্য বাংলাদেশের মতো জলবায়ু ক্ষতিগ্রস্ত দেশের ওপর ঋণ পরিশোধের বোঝা বাড়ছে।

মঙ্গলবার (১৪ মে) ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের ‘সবুজ জলবায়ু তহবিলে বাংলাদেশের মতো ঝুঁকিপূর্ণ দেশের অভিগম্যতা : সুশাসনের চ্যালেঞ্জ ও উত্তরণের উপায়’ শীর্ষক গবেষণা প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।

রাজধানীর ধানমন্ডিতে অবস্থিত টিআইবি কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান। তিনি বলেন, জিএসএফে জবাবদিহিতা করার মতো অবকাঠামো নেই। নিজস্ব নীতিমালা লঙ্ঘন ও বৈষম্যমূলক আচরণ করছে প্রতিষ্ঠানটি। এছাড়া তাদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগও রয়েছে।

টিআইবির নির্বাহী পরিচালক বলেন, বাংলাদেশর যে পরিমাণ অর্থ প্রয়োজন, জিএসএফের মাধ্যমে তার সিংহভাগ আসার কথা। জলবায়ু ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলো কোনো সুফল পাচ্ছে না। বরং তারা আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর কাছে অর্থায়ন বেশি করছে। যা একদমই গ্রহণযোগ্য নয়।

এদিন সংবাদ সম্মেলনে টিআইবির গবেষক নেওয়াজুল মাওলা ও সহিদুল ইসলাম গবেষণার ফলাফল তুলে ধেরেন। গবেষণায় জানানো হয়, জিএসএফের ঋণের অর্থ বিদেশি মুদ্রায় সুদসহ ফেরত দিতে হয়। এতে ঋণগ্রহীতা দেশগুলোর বহিস্থ ঋণের চাপ বাড়ে। এ কারণে স্থানীয় মুদ্রার ওপর চাপ সৃষ্টিসহ জলবায়ু ঝুঁকিতে থাকা দেশগুলোর ওপর চাপ সৃষ্টি হচ্ছে।

বাংলাদেশ ব্যাংক কি কোনো নিষিদ্ধ পল্লী, প্রশ্ন গয়েশ্বর রায়ের

বাংলাদেশ ব্যাংক কি কোনো নিষিদ্ধ পল্লী, প্রশ্ন গয়েশ্বর রায়ের

বাংলাদেশ ব্যাংকে কেন সাংবাদিকেরা যেতে পারবেন না, সে প্রশ্ন তুলেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়। তার প্রশ্ন, বাংলাদেশ ব্যাংক কি কোনো নিষিদ্ধ পল্লী  যে সাংবাদিকেরা ঢুকতে পারবেন না? এখন সাংবাদিকদেরই সিদ্ধান্ত নিতে হবে, তারা সেখানে ঢুকবেন কি ঢুকবেন না।

শনিবার নয়াপল্টনের একটি রেস্তোরাঁয় জিয়া মঞ্চের ঢাকা বিভাগীয় সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে গয়েশ্বর চন্দ্র রায় এ প্রশ্ন তোলেন।

গয়েশ্বর রায় বলেন, আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির মতো টাকা লুট করে পাচার করছে। এ জন্য সাংবাদিকেরা সেখানে ঢুকতে পারছেন না। তিনি বলেন, গণমাধ্যমকর্মীরা চাকরি হারানোর ভয়ে আছেন। তাই অনেক সত্য অপ্রকাশিত থাকছে। দেশের অর্থনীতি যে অবস্থায় দাঁড়িয়েছে, কয়দিন পর মানুষ টের পাবে। কোষাগার খালি, ডলারের অভাবে ব্যবসায়ীরা এলসি খুলতে পারছেন না। শিল্পকারখানা বন্ধ হতে বসেছে। চাকরির বাজারে হাহাকার।

ভারতীয় পণ্য বর্জনের প্রসঙ্গ তুলে বিএনপির এই নেতা বলেন, ভারতের পণ্য বয়কটের কথা বলব না। তবে আগে নিজেদের স্বাস্থ্যের কথা চিন্তা করতে হবে ভারতের পণ্য ক্রয় করার আগে। কেননা, তাদের ৫২৭টি পণ্য ইউরোপ নিষিদ্ধ করে দিয়েছে। পাশাপাশি দেশের জন্য ক্ষতিকর আওয়ামী লীগকেও বর্জন করতে হবে।

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের সমালোচনা করে গয়েশ্বর রায় বলেন, মুক্তিযুদ্ধের সময় ওবায়দুল কাদেররা কোথায় ছিলেন। তিনি আরও বলেন, আওয়ামী লীগে মুক্তিযোদ্ধা নেই, সেটা বলা যাবে না। তবে যারা আছেন, সবাই প্রবাসী মুক্তিযোদ্ধা। মুক্তিযুদ্ধের চেতনা আওয়ামী লীগ ফেরিওয়ালার মতো বিক্রি করছে।

বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আবদুস সালামের সভাপতিত্বে আরও বক্তব্য দেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন, সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুস সালাম আজাদ, স্বেচ্ছাসেবক–বিষয়ক সম্পাদক মীর সরাফত আলী, সহসাংগঠনিক সম্পাদক সেলিমুজ্জামান, জিয়া মঞ্চের সাধারণ সম্পাদক ফয়েজুল্লা ইকবাল, জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি আবু তালেব প্রমুখ।

নিউইয়র্কে বাংলাদেশ স্ট্রিট’ নামে সড়কের উদ্বোধন !

নিউইয়র্কে বাংলাদেশ স্ট্রিট’ নামে সড়কের উদ্বোধন !

নিউইয়র্কের একটি সড়কের নাম করণ করা হলো বাংলাদেশের নামে। ‘বাংলাদেশ স্ট্রিট’ নামে এই সড়কটির নাম ফলক রবিবার উদ্বোধন করা হয়। জ্যাকসন হাইটসের এই সড়কের নাম করণ অনুষ্ঠানে বিপুল সংখ্যক প্রবাসীর পাশাপাশি স্থানীয়দের ভিড় জমে।

স্থানীয় সময় রবিবার দুপুর ২টায় বাংলাদেশ স্ট্রিটের নামফলক উম্মোচন করেন জ্যাকসন হাইটস ও এলমহার্স্ট এলাকার নবনির্বাচিত সিটি কাউন্সিলম্যান উপ-মহাদেশীয় বংশোদ্ভূত শেখর কৃষ্ণান।

এসময় জ্যাকসন হাইটস বাংলাদেশি বিজনেস অ্যাসোসিয়েশনের (জেবিবিএ) সাবেক ও বর্তমান কর্মকর্তা, বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠনের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

বাংলাদেশ স্ট্রিটের নামফলক উম্মোচন অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন নিউ ইয়র্কের কংগ্রেসওমেন গ্রেস মেং, অ্যাসেম্বলিওম্যান ক্যাটালিনা ক্রুজ, স্টিভেন রাঘাব, কাউন্সিল মেম্বার জেসিকা গঞ্জালেজ-রোজাস, অ্যাসেম্বলিম্যান স্টিভেন রাগা, কাউন্সিল মেম্বার লিন্ডা লি, জেবিবিএর বর্তমান সভাপতি হারুন ভূঁইয়া ও সাধারণ সম্পাদক ফাহাদ সোলায়মান, অপর জেবিবিএর সভাপতি গিয়াস আহমেদ, সাধারণ সম্পাদক তারেক হাসান খানসহ শত শত বাংলাদেশি।

উল্লেখ্য, নিউ ইয়র্ক প্রবাসী বাংলাদেশিদের দীর্ঘদিনের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে গত ১৬ ফেব্রুয়ারি কাউন্সিলম্যানদের সাধারণ সভায় ‘বাংলাদেশ স্ট্রিট’  নামকরণের সিদ্ধান্ত গ্রহণের উদ্যোগ নিলে পরে ৪৭-০ ভোটে তা পাস হয়। সেই থেকে জ্যাকসন হাইটসের ৩৭ এভিনিউয়ের ৭৩ স্ট্রিটের নামকরণ করা হয় ‘বাংলাদেশ স্ট্রিট’। বিলটির সিদ্ধান্ত নম্বর হলো- আইএনটি ৮৯৭।


নিউইয়র্কের বাংলাদেশি অধ্যুষিত জ্যাকসন হাইটসে ‘বাংলাদেশ’ নামে সড়ক করার জোর তৎপরতা চালান জেবিবিএর সাবেক ও বর্তমান কর্মকর্তারা।

জানা যায়, গত ১৬ ফেব্রুয়ারি নিউ ইয়র্ক সিটির ১২৯টি স্ট্রিটের পুনর্নামকরণের বিলটি সভায় আলোচনায় আসে। এক এক করে ১২৯টি স্ট্রিটের নতুন নামকরণের প্রস্তাব শোনানো হয়। পাঁচ বরোতেই নতুন নামকরণ করা হয়েছে বিভিন্ন স্ট্রিটের বা এভিনিউয়ের। এসব নামকরণ করা হয়েছে বিভিন্ন কমিউনিটির নিজ দেশের বা বিশিষ্ট ব্যক্তির নামে। নিউ ইয়র্ক সিটিতে বাংলাদেশি প্রবাসীদের সবচেয়ে বড় ব্যবসাকেন্দ্র ও সাংস্কৃতিক প্রাণকেন্দ্র জ্যাকসন হাইটসের ৭৩ স্ট্রিটের এক ব্লকের নামকরণ করা হলো ‘বাংলাদেশ স্ট্রিট’।

ভারতের প্রভাবে নমনীয়তা হাস্যকর, যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থানে কোন পরিবর্তন নেই: ডনাল্ড লু

ভারতের প্রভাবে নমনীয়তা হাস্যকর, যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থানে কোন পরিবর্তন নেই: ডনাল্ড লু

বাংলাদেশে গণতন্ত্র ও মানবাধিকার প্রশ্নে যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান অপরিবর্তিত থাকবে বলে জানিয়েছেন সদ্য ঢাকা সফর করে যাওয়া দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়াবিষয়ক মার্কিন সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডনাল্ড লু। বুধবার মধ্যরাতে ঢাকা ছেড়ে যাওয়ার কয়েক ঘণ্টা আগে দেশের একটি পত্রিকা এবং একটি বেসরকারি টেলিভিশনকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি যুক্তরাষ্ট্রের এই অবস্থান পুনর্ব্যক্ত করেন। সাক্ষাৎকারে ভারতের মধ্যস্থতা বা তাদের প্রভাবে প্রভাবিত হয়ে ০৭ই জানুয়ারি অনুষ্ঠিত দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র তাদের অবস্থান নরম করেছে, বিএনপি নেতাদের এমন অভিযোগও উড়িয়ে দেন, এমন দাবিকে হাস্যকর বলে মন্তব্য করেন তিনি। সেই সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশকে ভারতের চোখে দেখে বলে এ অঞ্চলে যে ধারণা বিদ্যমান সেটাও খণ্ডনের চেষ্টা করেন লু। বলেন, বাংলাদেশে নিজ স্বার্থ, নিজস্ব বিবেচনা বা দৃষ্টিকোণ দিয়ে দেখে যুক্তরাষ্ট্র। ভারত, চীন কিংবা রাশিয়ার স্বার্থের দৃষ্টিকোণ দিয়ে নয়। তিনি বলেন, বাংলাদেশি বন্ধুদের সঙ্গে আমরা সরাসরি আলোচনা করি। তবে এটাও সত্য যে, যুক্তরাষ্ট্র ও ভারতের মধ্যে আলোচনা হয় এ অঞ্চলের পরিস্থিতি নিয়ে। সেই আলোচনায় শ্রীলঙ্কা, নেপাল, মালদ্বীপ- কখনো কখনো বাংলাদেশ প্রসঙ্গও থাকে।

প্রথম আলো এবং ইনডিপেনডেন্ট টিভিকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের জ্যেষ্ঠ এই কর্মকর্তা র‍্যাবের ওপর নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার, বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি, গাজায় ফিলিস্তিনিদের ওপর ওপর নৃশংসতার বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ছাত্র বিক্ষোভ, বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্কের ভবিষ্যৎ, এই অঞ্চলে চীনের ক্রমবর্ধমান প্রভাবসহ নানা বিষয়ে কথা বলেন।সাক্ষাৎকারে তিনি কিছু বিষয় খোলাসা করে জানান। 

৭ই জানুয়ারির নির্বাচনকে ঘিরে বাংলাদেশের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্কে মতপার্থক্য তৈরি হয়েছিল, তা পাশে সরিয়ে যুক্তরাষ্ট্র সামনে এগিয়ে যেতে চায়। এক প্রশ্নের জবাবে লু বলেন, নির্বাচনে সহিংসতা ও ভোটারদের ওপর বলপ্রয়োগ করায় আমরা পুলিশ, সরকারি ও বিরোধী দলের নেতাদের ওপর ভিসা নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছিলাম। আমরা আওয়ামী লীগ ও বিএনপিকে অর্থপূর্ণ সংলাপে বসতে বলেছিলাম। আমরা সভা-সমাবেশ ও বাকস্বাধীনতার পক্ষে সোচ্চার ছিলাম। এটা খুবই স্বাভাবিক। সব অঞ্চলেই আমরা এমন করি। বাংলাদেশে এসব মূল্যবোধ বজায় রাখতে আমরা কাজ করে যাব।

তিনি বলেন, আমাদের সম্পর্কের মাঝে অনেক জটিল বিষয় রয়েছে। গত বছর নির্বাচন নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে অনেক উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছিল, এটা তো এখন আর গোপন নয়। র‍্যাবের নিষেধাজ্ঞা নিয়ে আমরা কাজ করছি। আমরা সামগ্রিক মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করছি। ব্যবসার পরিবেশ উন্নয়ন নিয়েও কথা বলেছি। বিষয়গুলো তো জটিল। যেমন শ্রম অধিকারের মতো বিষয়ে আমরা দীর্ঘদিন ধরে কাজ করে যাচ্ছি। এতে অগ্রগতি খুব ধীরগতির। এ ক্ষেত্রে অগ্রগতিতে সময় লাগে।

বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে আলোচনায় বলেছি, জটিল বিষয়ের পাশাপাশি আমরা সহযোগিতার নতুন ক্ষেত্র খুঁজবো।  ইতিবাচক অ্যাজেন্ডা নিয়ে কাজ করবো। যেমন যুক্তরাষ্ট্রে যদি বাংলাদেশের শিক্ষার্থীর সংখ্যা বাড়ানো হয়, ক্রমবর্ধমান হারে ব্যবসা ও বিনিয়োগ হয়, পরিবেশবান্ধব জ্বালানির জন্য পথ তৈরি করা যায়, যাতে বাংলাদেশের পরিবেশের উন্নতি হয় আর অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি ত্বরান্বিত করা যায়; আমরা যদি এ বিষয়গুলো করতে পারি, তবে জটিল বিষয়গুলো সমাধানের পথ আমাদের জন্য সহজ হয়ে যাবে।

র‍্যাবের বিরুদ্ধে বিদ্যমান মার্কিন নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের কোনো অগ্রগতি আছে কি-না? জানতে চাইলে ডনাল্ড লু বলেন,  র‍্যাবের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা এখনো বহাল আছে। এক বছর আগে বাংলাদেশ সফরের সময় র‍্যাবের বিষয়ে হিউম্যান রাইটস ওয়াচের প্রতিবেদনের প্রসঙ্গ তুলেছিলাম। হিউম্যান রাইটস ওয়াচ গত বছর তাদের প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছিল, র‍্যাবের হাতে বিচারবহির্ভূত হত্যা ও গুম নাটকীয়ভাবে কমে গেছে। এটা বিরাট ঘটনা। এটা অবশ্যই ভালো অগ্রগতি উল্লেখ করেই বলতে চাই, আমাদের এখনো উদ্বেগ রয়ে গেছে। আমরা দেখছি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অন্য বিভাগের সদস্যরা এসব অপরাধ করে চলেছেন। র‍্যাবের অতীতের অপরাধের জবাবদিহি নিশ্চিত করা হচ্ছে কি না, সেটাও আমরা দেখতে চাই। এ বিষয়গুলো কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ। আমরা জানি যে বাংলাদেশ সরকারের (র‍্যাবের নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার) প্রক্রিয়া নিয়ে ধৈর্যের অভাব আছে। গত বছর বিচারবহির্ভূত হত্যা ও গুম নাটকীয়ভাবে কমে যাওয়ার মাধ্যমে এটা প্রমাণিত যে, র‍্যাব মানবাধিকার লঙ্ঘন না করেই আইনশৃঙ্খলা রক্ষার অর্পিত দায়িত্ব পালন করতে পারে।

এক প্রশ্নের জবাবে লু বলেন, বাংলাদেশে মানবাধিকার নিয়ে সমস্যা দেখা দিলে আমরা সেটি নিয়ে কথা বলি। কারণ, বাংলাদেশ আমাদের সহযোগী। আমাদের কোনো সমস্যা দেখলেও বাংলাদেশ তা খোলামনে বলতে পারে। লু বলেন, যুক্তরাষ্ট্রে বিক্ষোভ দমনকালে পুলিশের অতি উৎসাহী পদক্ষেপ থাকলে তা অবশ্যই তদন্তে ধরা পড়বে। পুলিশ অতি উৎসাহী কাজ করলে তাকে অবশ্যই বিচারের আওতায় আনা হবে। গণতন্ত্রে এটাই হয়।

বিচারের মুখোমুখি  হচ্ছে বেতন না দেওয়া মালয়েশিয়ান কোম্পানিগুলো

বিচারের মুখোমুখি হচ্ছে বেতন না দেওয়া মালয়েশিয়ান কোম্পানিগুলো

মালয়েশিয়া এবার বাংলাদেশি কর্মীদের স্বার্থ রক্ষায় বেশ সোচ্চার হয়েছে। বিচারের মুখোমুখি হতে যাচ্ছে বাংলাদেশি কর্মীদের বেতন না দেওয়া মালয়েশিয়ান কোম্পানি, মুলিয়াওন এনার্জি এসডিএন বিএইচডিকে। সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হওয়া মালয়েশিয়ায় মিছিল করা প্রায় সাত শতাধিক বাংলাদেশি কর্মীদের ক্ষতিপূরণ দিতে ব্যর্থ হওয়া এবং শ্রম আইন লঙ্ঘন করার দায়ে দেশটির ডেপুটি পাবলিক প্রসিকিউটর উক্ত কোম্পানির কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন

এর আগে গত ৫ ফেব্রুয়ারি জাবাতান তেনাগা কেরজা সেমেনানজুং মালয়েশিয়া (জেটিকে) কর্মকর্তারা উক্ত কোম্পানির নিয়োগকর্তা ও কর্মচারীদের উপস্থিতিতে শ্রম আদালত ৭৩৩ জন বাংলাদেশি শ্রমিকের নিয়োগকর্তাকে ১ কোটি ৩৫ লাখ ৫৫৭ মিলিয়ন রিঙ্গিত বকেয়া বেতন পরিশোধ করার নির্দেশ দেন।

দেশটির অনলাইন, মালয় মেইল জানিয়েছে, চাকরির দিয়ে বাংলাদেশি কর্মীদের মালয়েশিয়ায় নিয়ে এসে অমানবিক পরিস্থিতিতে ফেলে দেশটির জোহর রাজ্যের পেঙ্গেরাংয়ের একটি কোম্পানি। মুলিয়াওন এনার্জি এসডিএন বিএইচডি নামের ওই কোম্পানিটি ভুয়া চাকরি দেখিয়ে সে দেশে কর্মী নিয়েছে। পরে মালয়েশিয়ার জোহর অঞ্চলের শ্রম আদালতে অভিযোগ দায়ের করলে অর্ধেক বেতন পরিশোধের শর্তে বিরোধ নিষ্পত্তি করতে রাজি হয়েছিল কোম্পানিটি।

এদিকে, গত বছরের অক্টোবর থেকে বেকার দিনযাপন করা এই কর্মীরা বাকি অর্ধেক বেতন কবে নাগাদ পাবে, সেই নিশ্চয়তা এখন পর্যন্ত পাওয়া যায়নি। তবে ১০ ফেব্রুয়ারির মধ্যে তাদের কর্মসংস্থান নিশ্চিতের নির্দেশও দিয়েছিলেন আদালত।

কিছু মালয়েশিয়ান কোম্পানি বাংলাদেশি প্রবাসী কর্মীদের বেতন দিতে ব্যর্থ হলে এই বছরের শুরুতে ৭৩০ জনেরও বেশি বাংলাদেশি কর্মী দশটি দলে ভাগ হয়ে দেশটির ডিপার্টমেন্ট অব লেবারে অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগের ভিত্তিতে নিয়োগদানকারী কোম্পানিকে বেতনের বিষয়টি সুরহার নির্দেশ দেয় সংশ্লিষ্ট দপ্তর। সেই নির্দেশনা মোতাবেক প্রায় ১ মিলিয়ন রিঙ্গিত বাংলাদেশি কর্মীদের পাওয়ার কথা ছিলো কিন্তু এ পর্যন্ত কোনো টাকাই পরিশোধ করেনি কোম্পানির মালিক পক্ষ।

দেশটির লেবার ডিপার্টমেন্টের সংশ্লিষ্ট সূত্রের বরাতে গত বৃহস্পতিবার, কয়েকটি স্থানীয় সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনে জানিয়েছে, অভিযোগকারীদের উপর আনীত অভিযোগের ভিত্তিতে ১০টি ফাইল খোলা হয়েছিলো, যার মধ্য থেকে ৬টি ফাইলের ব্যাপারে অগ্রগতি জানতে চেয়েছেন দেশটির ডেপুটি পাবলিক প্রসিকিউটর।

ডিরেক্টর-জেনারেল অফিসে এ কেইসের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র দেশটির সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছে যে, যে প্রক্রিয়ায় বিষয়গুলো এগোচ্ছে তাতে এটা নিশ্চিত যে, এই কোম্পানিগুলো শাস্তির মুখোমুখি হতে যাচ্ছে। তবে এ ব্যাপারে স্থানীয় সংবাদমাধ্যমগুলো যোগাযোগ করলে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হয়নি উক্ত কোম্পানি কর্তৃপক্ষ।

এদিকে, দেশটির মানবসম্পদ মন্ত্রী স্টিভেন সিম গত ফেব্রুয়ারিতে ৭৩৩ বাংলাদেশি কর্মী এবং নিয়োগকারী ফার্মের মধ্যে মধ্যস্থতার নির্দেশকে একটি ল্যান্ডমার্ক কেস হিসেবে বর্ণনা করে বিদেশি কর্মী নিয়োগ ব্যবস্থা থেকে লাভবান শিল্পগুলোকে একটি শক্তিশালী বার্তা দেবে বলে আশা করেছিলেন। সেই সময় তিনি আরো বলেছিলেন, নিয়োগকর্তারা যদি দোষী সাব্যস্ত হন তবে তাদের ব্লক লিস্টেড করা হবে এবং বিদেশি শ্রমিক নিয়োগে তাদের কোটা বাতিল করা হবে।

এদিকে, মাইগ্রান্ট রাইটসের কর্মীরা এ বিবৃতির সমালোচনা করে বলেছিলেন যে, মধ্যস্থতার এ নির্দেশ বিদেশি কর্মী নিয়োগের নামে মানব পাচারের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় শক্তিশালী পদক্ষেপ নেওয়ার ক্ষেত্রে যথেষ্ট নয়।

তবে, মানব পাচারের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে যৎসামান্য চেষ্টার জন্য মালয়েশিয়া বরাবরই সমালোচিত হয়ে আসছে।

চাঁদা না পেয়ে বাফেলোতে দুই বাংলাদেশিকে গুলি করে হত্যা

চাঁদা না পেয়ে বাফেলোতে দুই বাংলাদেশিকে গুলি করে হত্যা

যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক র বাফেলোতে অজ্ঞাত বন্দুকধারীর গুলিতে দুই বাংলাদেশি নিহত হয়েছেন। গত ২৭ এপ্রিল শনিবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে বাফেলোর ইস্ট ফেরি ও জেনার স্ট্রিটের ১০০ ব্লকে এ ঘটনা ঘটে। নিহতরা হলেন-সিলেটের কানাইঘাট উপজেলার আবু সালেহ মো. ইউসুফ জনি (৫৩) ও কুমিল্লার বাবুল মিয়া (৫০)। হত্যাকাণ্ডের সময় শহরের পূর্বাঞ্চলে হ্যাজেলউড এলাকায় জনি ও বাবুল বাড়ি সংস্কারের কাজ করছিলেন। 

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, জনি ও বাবুল বাড়ি সংস্কারের কাজ করার সময় এক কৃষ্ণাঙ্গ যুবক এসে তাদের কাছ থেকে অর্থ (চাঁদা) দাবি করে। উভয়ের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। এক পর্যায়ে ওই যুবক বাবুল মিয়াকে চুরিকাঘাত করে। বাবুল মিয়াকে সহযোগিতা করতে এগিয়ে আসেন আবু সালেহ মোহাম্মদ ইউছুপ। আবু সালেহকে এগিয়ে আসতে দেখে দুর্বৃত্তরা গুলি করে পালিয়ে যায়। গুলিতে দুই জন ঘটনাস্থলেই মৃত্যুবরণ করেন। পরে পুলিশ এসে তাদের লাশ উদ্ধার করে। এ দু’জনের লাশ স্থানীয় ইসিএমসি হাসপাতালে রাখা হয়েছে। 

বাংলাদেশের মানবাধিকার লঙ্ঘনকারী কর্মকর্তারা যখন জাতিসংঘের শান্তিরক্ষী

বাংলাদেশের মানবাধিকার লঙ্ঘনকারী কর্মকর্তারা যখন জাতিসংঘের শান্তিরক্ষী

বাংলাদেশ এবং শ্রীলঙ্কা নির্যাতন ও হত্যার সঙ্গে জড়িত কর্মকর্তাদের জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা মিশনে পাঠিয়েছে৷ ডিডাব্লিউ, নেত্র নিউজ এবং স্যুডডয়চে সাইটুং এর অনুসন্ধানে বেরিয়ে এসেছে এই তথ্য৷ জাতিসংঘ দৃশ্যত বিষয়টি উপেক্ষা করছে৷

প্রথমবার দেখলে এটিকে এক নিরীহ ছবি মনে হবে: ২০২২ সালের এক রৌদ্রজ্জ্বল দিনে এক ডজন নারী ও পুরুষ একত্র হয়ে সেলফির জন্য পোজ দিয়েছেন৷ তাদের সবার পরনে সামরিক পোশাক - তাদের ব্যাজ তাদের মিশরীয়, ইন্দোনেশীয় ও বাংলাদেশি কর্মকর্তা হিসেবে তুলে ধরছে৷ তাদের একজন জাতিসংঘ শান্তিরক্ষীর হালকা নীল বিশেষ টুপি পরে আছেন৷ দলটি গণতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্রী কঙ্গোতে জাতিসংঘের মনুস্কো মিশনে তাদের মেয়াদের জন্য সদ্যই ইন্ডাকশন কোর্স সম্পন্ন করেছে৷

নিরীহই বটে, তবে ছবির মাঝখানে থাকা চশমা পরা টাক মাথার মানুষটির ক্ষেত্রে বিষয়টি একটু ভিন্ন৷ তার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম থেকে এক সামরিক সূত্র ছবিটি সংগ্রহ করে ডিডাব্লিউ, সুইডেনভিত্তিক অনুসন্ধানী সংবাদমাধ্যম নেত্র নিউজ এবং জার্মান সংবাদপত্র স্যুডডয়চে সাইটুংকে দিয়েছে৷

জাতিসংঘের মিশনে মোতায়েনের আগে তিনি বাংলাদেশের অভিজাত বাহিনী ব়্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটেলিয়ন বা ব়্যাব এর ইন্টেলিজেন্স উইংয়ের উপপরিচালক ছিলেন৷

https://youtu.be/kjgBccv8DP0?si=UyqOO4OmU7Ka9ouM

মূলত বাংলাদেশ পুলিশ ও সামরিক বাহিনীর সদস্যদের নিয়ে ২০০৪ সালে জঙ্গিবাদ এবং সহিংস অপরাধের বিরুদ্ধে লড়াই করতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং অন্যদের সহায়তায় বাহিনীটি গড়ে তোলা হয়৷ কিন্তু বর্বর কার্যকর পদ্ধতি অনুসরণ করার কারণে এটি দ্রুতই বিস্তৃত মানবাধিকার লঙ্ঘনের দায়ে অভিযুক্ত হয়৷ ফলে এই বাহিনীকে একসময় সহায়তা করা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ২০২১ সালে সেটির উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে৷

গত বছর প্রকাশিত এক অনুসন্ধানী প্রতিবেদনে ডিডাব্লিউ এবং নেত্র নিউজ উন্মোচন করে যে ব়্যাব নির্যাতন, হত্যা এবং অপহরণের সঙ্গে যুক্ত এবং এসব অপরাধ ঢাকতে বাহিনীটি অনেককিছু করে৷ তাদের টার্গেট: সন্দেহভাজন অপরাধী, বিরোধী দলীয় কর্মী, এবং মানবাধিকার রক্ষকরা৷

ব়্যাবের সদস্যরা আপাতদৃষ্টিতে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ রাজনৈতিক পর্যায়ের সহায়তায় তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করে বলে জানিয়েছেন দুইজন হুইসেলব্লোয়ার৷ সরকার অবশ্য এই অভিযোগ ‘‘ভিত্তিহীন এবং অসত্য’’ বলে প্রত্যাখ্যান করেছে৷

ব়্যাব সদস্যরা জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা মিশনে

সেই উন্মোচনের এক বছর পর ডিডাব্লিউ, নেত্র নিউজ এবং স্যুডডয়চে সাইটুংয়ের অনুসন্ধানে বেরিয়ে এসেছে যে কুখ্যাত বাহিনীটির সদস্যদের আপাতদৃষ্টিতে শান্তিরক্ষা মিশনে পাঠানো হচ্ছে: এবং একটু আগে উল্লেখ করা ইন্টেলিজেন্স উইংয়ের উপপ্রধানই একমাত্র ব্যক্তি নন যাকে বাহিনীটি থেকে শান্তিরক্ষায় মোতায়েন করা হয়েছে৷ আমাদের একাধিক সূত্র বাহিনীটিকে ‘‘ডেথ স্কোয়াড’’ আখ্যা দিয়েছে৷

বেশ কয়েকমাস ধরে ডিডাব্লিউ এবং এর সহযোগীরা বাংলাদেশসহ বিভিন্ন দেশে সামরিক এবং জাতিসংঘের কয়েকটি সূত্রের সাক্ষাৎকার নিয়েছে৷ পাশাপাশি বিভিন্ন গোপন সামরিক নথি এবং মোতায়েন তালিকা যাচাইবাছাই করেছে এবং অনেক পরিশ্রমের পর ফ্লিকার, লিংকডইন ও ফেসবুকে বিভিন্ন কর্মকর্তাকে সনাক্ত করেছে৷

এক ব্যক্তির জাতিসংঘে মোতায়েনের বিষয়টি তার প্রতিদিনের দৌড়ানোর রুট ধরে নিশ্চিত হওয়া গেছে৷ তিনি একটি জগিং অ্যাপে সেই তথ্য আপলোড করতেন৷ এই উৎসাহী দৌড়বিদ মাসের পর মাস সেন্ট্রাল আফ্রিকান রিপাবলিকের রাজধানী বাংজিতে দৌড়েছেন৷ জাতিসংঘের মিনুস্কা মিশন সেখানে৷ আরেক ছবিতে তিনি ব়্যাব সদরদপ্তরের সামনে সেলফির জন্য পোজ দিয়েছেন৷

শান্তিরক্ষীদের মাঝে টর্চার সেল চালানো দুই উপপরিচালক

আমরা আমাদের অনুসন্ধানে দেখেছি একশোর বেশি ব়্যাব সদস্য শান্তিরক্ষা মিশনে গিয়েছেন, এবং তাদের মধ্যে অন্তত ৪০ জন গত পাঁচবছরে গিয়েছেন৷

যদিও আমাদের কাছে তথ্যপ্রমাণ নেই যে প্রত্যেক সদস্যই অপরাধের সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন, তাদের অন্তত তিনজন — নাঈম এ., হাসান টি. এবং মাসুদ আর. — ব়্যাবের কুখ্যাত ইন্টেলিজেন্স উইংয়ে কাজ করেছেন৷ তাদের দুজন সেখানে উপপরিচালক ছিলেন৷ একাধিক সূত্র অনুযায়ী, ব়্যাবের এই ইউনিটটি বাংলাদেশ জুড়ে টর্চার সেলের একটি নেটওয়ার্ক পরিচালনা করে৷ এসব সেলের কিছু সেফ হাউস রয়েছে, অন্যগুলো ব়্যাবের কম্পাউন্ডে আড়ালে রয়েছে৷ ব়্যাবের হাত থেকে বেঁচে ফেরা একাধিক ব্যক্তি এবং সামরিক সূত্র ডিডাব্লিউ এবং নেত্র নিউজকে এসব সেলে মারধর, ভয় দেখাতে হত্যা করার অভিনয়, ওয়াটারবোর্ডিং এবং বৈদ্যুতিক শক দেয়া হয় বলে জানিয়েছেন৷

‘‘সহজলভ্য সব টুলই আমাদের রয়েছে,’’ ব়্যাবের সাবেক এক কর্মকর্তা ব্যাখ্যা করেন৷ তিনি সেখানে যেসব বর্বর ঘটনা দেখেছেন তার মধ্যে একটি হচ্ছে একজন বন্দিকে কন্টেইনারের মধ্যে ঢুকিয়ে সেটির নিচে আগুন জ্বালিয়ে দেয়া৷

‘‘এক পর্যায়ে ভেতরের তাপমাত্রা অসহনীয় হয়ে ওঠে এবং সেই বন্দি মুখ খুলতে বাধ্য হন,’’ বলেন তিনি৷

আরেকটি সূত্র নিশ্চিত করেছে যে টর্চার সেলে ‘‘বেসামরিক নাগরিকদের কাছ থেকে তথ্য বের করা হয়৷’’

একটি সূত্র ব়্যাব, নেত্র নিউজ এবং স্যুডডয়চে সাইটুংকে জানিয়েছেন যে এই দুই উপপরিচালক নির্যাতন এবং হত্যার মতো অপরাধের সঙ্গে জড়িত ছিলেন৷

যদিও এই দাবি স্বাধীনভাবে যাচাই করা সম্ভব হয়নি, তবে একাধিক অন্যান্য সূত্র নিশ্চিত করেছে যে কমান্ড দেওয়ার ক্ষমতা থাকা উপপরিচালকরা টর্চার সেলে যা কিছু ঘটছে তা অনুমোদন করে থাকতে পারেন কিংবা অন্তত জানতেন সেখানে কী হচ্ছে৷

কিন্তু তাসত্ত্বেও তাদেরকে ঝুঁকিতে থাকা বিভিন্ন বেসামরিক সম্প্রদায়কে সুরক্ষা দিতে শান্তিরক্ষী হিসেবে মোতায়েন করা হয়েছিল৷ দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর শান্তিরক্ষা বাহিনী তৈরির ধারনার জন্ম হয়৷ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের তত্ত্বাবধানে জাতিসংঘের সদস্য রাষ্ট্রগুলো থেকে সেনা এবং পুলিশ সদস্যদের নিয়ে এই বাহিনী তৈরি করা হয়৷ বিভিন্ন দেশের সরকার ব্যর্থ হলে এবং দেশগুলোতে গভীর সংকট সৃষ্টি হলে সেসব দেশে শান্তিরক্ষায় এই বাহিনীকে পাঠায় নিরাপত্তা পরিষদ৷

বর্তমানে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে হাজার হাজার শান্তিরক্ষী মোতায়েন রয়েছে৷ সংঘাত এবং সংকট নিরসনে গণতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্রী কঙ্গো থেকে সাউথ সুদান, সেন্ট্রাল আফ্রিকান রিপাবলিক, কসভো কিংবা কাশ্মীর অবধি নানা অঞ্চলে তাদের দেখা মেলে৷

শান্তিরক্ষার আদর্শ অনেক উঁচু হলেও বিগত বছরগুলোতে একক সেনা থেকে পুরা কন্টিনজেন্ট অবধি নানা কেলেঙ্কারিতে জড়িয়েছে৷ জাতিসংঘ দ্রুত সেসবের নিন্দাও জানিয়েছে৷ সমালোচকরা বলছেন, শান্তিরক্ষা কার্যক্রম ফলপ্রসু হচ্ছে না, যদিও যারা শান্তিরক্ষা কার্যক্রমের পক্ষে, তারা বলছেন, অসংখ্য জীবন বাঁচিয়েছে এই বাহিনী৷

২০১২ সালে বেশ কয়েকটি যৌন কেলেঙ্কারির ঘটনা শিরোনাম তৈরি করে৷ বিশেষ করে হাইতিতে শিশুদের ঘটনার পর জাতিসংঘ তার কর্মীদের জন্য নতুন মানবাধিকার নীতি ঘোষণা করে৷

শান্তিরক্ষীদের যাচাইয়ের দায়িত্বে ‘এবিউসিভ সরকার’

শান্তিরক্ষায় সেনা পাঠানো দেশগুলো সাধারণ ফোর্স কমান্ডার এবং তাদের সহকারীদের বাদে অন্যান্য সেনা সদস্যদের বাছাই এবং যাচাইয়ের দায়িত্ব পালন করে থাকে৷ এসব দেশকে প্রত্যেক সেনার জন্য প্রত্যয়ন দিতে হয় যে, তিনি মানবাধিকার লঙ্ঘন করেননি বা এমন কোনো অভিযোগও তার বিরুদ্ধে নেই৷

বাংলাদেশের ক্ষেত্রে এর অর্থ হচ্ছে ‘‘তারা একটি এবিউসিভ সরকারকে তার কর্মকর্তারা এবিউসিভ কিনা তা নির্ধারণ করতে বলছে,’’ বলেন হিউম্যান রাইটস ওয়াচ দক্ষিণ এশিয়ার উপপরিচালক মীনাক্ষী গাঙ্গুলি৷

বাংলাদেশ সরকার, গাঙ্গুলি ব্যাখ্যা করেন, ‘‘মনে হয় বিশ্বাস করে না যে, যারা মানবাধিকার লঙ্ঘন করে তাদের বিচার করার বা জবাবদিহির আওতায় আনার দরকার আছে৷’’ এখন অবধি অল্প কয়েকজন ব়্যাব সদস্য বিচারের মুখোমুখি হয়েছেন৷

এবং একারণেই তিনিসহ দেশি বিদেশি আরো কয়েকটি মানবাধিকার সংগঠন দীর্ঘদিন ধরে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে ব়্যাবকে পুরোপুরি নিষিদ্ধের দাবি জানাচ্ছে৷

শুধুমাত্র তারাই এই বিষয়ে প্রচারণা চালাচ্ছেন এমন নয়: জাতিসংঘের সদস্য রাষ্ট্রগুলোর মানবাধিকার পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণের জন্য স্বাধীন বিশেষজ্ঞদের নিয়ে গঠিত জাতিসংঘের ‘কমিটি এগেনস্ট টর্চার’ ২০১৯ সালের আগস্টে বাংলাদেশ বিষয়ক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে৷

এর লেখকরা ‘‘অসংখ্য প্রতিবেদনে’’ গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে যেখানে ব়্যাবের সদস্যদের বিরুদ্ধে ‘‘নির্যাতন, নির্বিচারে গ্রেপ্তার, গোপনে আটক, গুম এবং তাদের হেফাজতে থাকা অবস্থায় বিভিন্ন ব্যক্তিকে বিচারবহির্ভূতভাবে হত্যার বিশ্বাসযোগ্য অভিযোগ রয়েছে৷’’

‘গভীর উদ্বেগ’

প্রতিবেদনের লেখকদের একজন ইয়েন্স মডভিগ৷ এই মেডিকেল ডক্টর নির্যাতনবিরোধী ডেনিশ ইন্সটিটিউট ডিগনিটি পরিচালনা করেন৷ কোপেনহেগেনের এক সাধাসিধে অফিস ব্লকে তার কার্যালয় অবস্থিত৷

প্রতিষ্ঠানটির ছোট্ট রান্নাঘরে কফি তৈরি করতে করতে তিনি বাংলাদেশের বিভিন্ন নিরাপত্তা বাহিনীর মানবাধিকার লঙ্ঘন নিয়ে বিশেষজ্ঞদের ‘গভীর উদ্বেগের' কথা স্মরণ করেন৷ তিনি জানান যে, এই উক্তিটি তারা হালকাভাবে করেননি৷

মডভিগ বলেন, ‘‘ব়্যাবের সাবেক এবং বর্তমান সদস্যদেরকে শান্তিরক্ষা মিশনে যেতে দেয়া উচিত হবে না বলে সুপারিশ করেছিল কমিটি৷’’

তাসত্ত্বেও আমাদের অনুসন্ধানে দেখা যাচ্ছে কিছুই হয়নি৷

ডিডাব্লিউ, নেত্র নিউজ এবং স্যুডডয়চে সাইটুং একাধিকবার এই বিষয়ে ক্যামেরার সামনে বক্তব্য দিতে জাতিসংঘের ‘‘ডিপার্টমেন্ট অব পিসকিপিং অপারেশন্স’’ এর প্রতি অনুরোধ জানিয়েছে৷ কিন্তু বিভাগটি তাতে রাজি হয়নি৷

তার বদলে জাতিসংঘ আমাদের অনুসন্ধানের ব্যাপারে লিখিত বক্তব্য দিতে রাজি হয়েছে৷ এক মুখপাত্র লিখেছেন, ‘‘প্রত্যেক ব্যক্তিকে যাচাইবাছাইয়ের জন্য আমাদের কাছে প্রয়োজনীয় সম্পদ নেই৷ তবে সেনা এবং পুলিশ সদস্য সরবরাহকারী দেশগুলোর সুনির্দিষ্ট দায়িত্ব সম্পর্কে আমাদের একটি দীর্ঘস্থায়ী নীতি বলবৎ আছে৷’’

বাংলাদেশেরক্ষেত্রে, সেই মুখপাত্র জানান, ‘‘প্রতিরক্ষা এবং নিরাপত্তা বাহিনীর, সুনির্দিষ্টভাবে ব়্যাব সদস্যদের মাধ্যমে, মানবাধিকার লঙ্ঘনের গুরুতর অভিযোগগুলো নিয়ে জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা দ্বিপাক্ষিকভাবে দেশটির জাতীয় কর্তৃপক্ষগুলোর সঙ্গে ধারাবাহিকভাবে যুক্ত থেকে উদ্বেগ জানিয়ে আসছে৷’’

জাতিসংঘ কি ব্ল্যাকমেইলের কাছে অসহায়?

আমরা অবশ্য জাতিসংঘের একজনকে খুঁজে পেয়েছি যিনি ক্যামেরার সামনে কথা বলতে রাজি হয়েছেন৷ অ্যান্ড্রু গিলমোর জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক সাবেক সহকারী মহাসচিব৷ বর্তমানে তিনি বার্লিনে ব্যর্গহফ ফাউন্ডেশনের নেতৃত্বে রয়েছেন৷ এটি বিশ্বব্যাপী শান্তির পক্ষে প্রচারণা চালায়৷ দীর্ঘদিন জাতিসংঘে কাজ করা এই কূটনীতিক জানান যে, তিনি সাক্ষাৎকারের বিষয় এবং মুডের উপর ভিত্তি করে কোন জ্যাকেট পরবেন তা নির্ধারণ করেন৷

শান্তিরক্ষা এবং মানবাধিকার লঙ্ঘন বিষয়ক প্রতিবেদনের জন্য তিনি বিষন্ন নীল বেছে নিয়েছেন৷

আমি যদি এখনো জাতিসংঘে থাকতাম, তিনি বলেন, ‘‘তাহলে সম্ভবত এটা বলতে এত স্পষ্টভাষী হতে পারতাম না যে, আমরা কিছু সংখ্যক সত্যিই খুব আজেবাজে সেনা পাই এবং কিছু খুব নিষ্ঠুর সেনাও৷’’

তিনি এটাও জানান যে বাংলাদেশ কোনো অনন্য রাষ্ট্র নয়৷ গিলমোর বলেন, ‘‘এটাই প্রথম নয় যে সদস্য রাষ্ট্রগুলো দুর্বল মানবাধিকার রেকর্ড থাকা মানুষদেরকে জাতিসংঘে তাদের ব্যাটেলিয়নে যুক্ত করেছে৷''

কখনো কখনো, তিনি বলেন, ‘‘এমনও হতে পারে যে পুরো কন্টিনজেন্ট কোনো মামলায় জড়িয়েছিল, যেমন তাদের নিজের দেশে সাধারণ মানুষকে দমন, এবং অন্যান্য সময়ে এটা একক ব্যক্তিদের ক্ষেত্রেও ঘটেছে৷’’

তবে তিনি গুরুত্ব দিয়ে জানান যে জাতিসংঘ এধরনের ঘটনা রুখতে বারংবার সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছে৷

তিনি অবশ্য স্বীকার করেছেন যে, যদি জাতিসংঘ দেশগুলোকে অনেক বেশি চাপ দিত তাহলে তারা তাদের সব সেনা প্রত্যাহার করে নেওয়ার হুমকি দেওয়ার ঝুঁকি ছিল৷ ‘‘যদি সেই সদস্য দেশের সরকার একটি কন্টিনজেন্ট বা একজন একক ব্যক্তিকে সামনে ঠেলে দেয় তখন কিছু করা বেশ কঠিন ছিল,’’ যোগ করেন তিনি৷

একবার, তিনি বলেন, ‘‘একটি দেশ যেটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ছিল আক্ষরিক অর্থেই বলেছে, ঠিক আছে, আমরা একসঙ্গে সব সেনা প্রত্যাহার করে নেবো৷ এবং তখন সেই সময়কার জাতিসংঘের মহাসচিবকে সেই দেশে গিয়ে দেশটির রাষ্ট্রপ্রধানের কাছে মূলত ক্ষমা চাইতে হয়েছিল৷’’

‘‘অন্যথায়, জাতিসংঘের চারটি শান্তিরক্ষা কার্যক্রম ভেঙে পড়তো,’’ বলেন তিনি৷

তবে তার সাক্ষ্য একটি বিষয়ের দিকে মনোযোগ টানে: শান্তিরক্ষী ইস্যুতে জাতিসংঘকে ব্ল্যাকমেইলের কাছে অসহায় মনে হয়৷

জাতিসংঘের একটি সূত্র এই বিষয়ে একমত পোষণ করেছেন: সামান্য সমালোচনাতেও বাংলাদেশের কর্মকর্তারা সেনা প্রত্যাহার করে নেওয়ার হুমকি দেন৷ বাংলাদেশ জাতিসংঘে সেনা পাঠানো অন্যতম একটি রাষ্ট্র৷ চলতি বছরের মার্চ অবধি প্রায় ছয় হাজার বাংলাদেশি শান্তিরক্ষী বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে মোতায়েন ছিলেন৷

তবে এটা নিশ্চিত নয় যে, বাংলাদেশ আসলেই জাতিসংঘের মিশন থেকে নিজেদের সরিয়ে নেবে কিনা৷ কারণ এসব মিশন একক সেনাদের এবং যেসব দেশ তাদের পাঠাচ্ছে সেসবের জন্য লোভনীয় ব্যাপার৷

সরকারি কর্মকর্তাদের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশ গত ২৩ বছরে শান্তিরক্ষা মিশন থেকে ২৮ হাজার কোটি টাকা আয় করেছে৷ মিশনে একজন সেনা সদস্য নিজ দেশে থাকাকালীন সময়ের তুলনায় বেশি বেতন পান৷

জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা বিষয়ক মুখপাত্র অবশ্য আন্তর্জাতিক সংগঠনটি দৃশ্যত হুমকির কাছে অসহায় হয়ে পড়ার বিষয়টি অস্বীকার করেছেন৷ তিনি বলেন, ‘‘বর্তমানে মোতায়েনকৃত ৬৫ হাজার সেনার দশ শতাংশেরও কম সবচেয়ে বড় সেনা সরবরাহকারী দেশ থেকে এসেছেন৷ ফলে একক কোনো সেনা সহায়তা প্রদানকারী দেশ শান্তিরক্ষা কর্মকান্ডের কার্যকারিতা নষ্ট করার জন্য সব সেনা প্রত্যাহারের বিশ্বাসযোগ্য হুমকি দিতে পারে না৷’’

জাতিসংঘের হাত দৃশ্যত বাঁধা

গিলমোর জাতিসংঘের হাত বাঁধা মনে করার একটি কারণও ব্যাখ্যা করেছেন৷ তিনি যখন ‘‘অনেক, অনেক তরুণ’’ ছিলেন, তখন অধিকাংশ শান্তিরক্ষী সুইডেন এবং আয়ারল্যান্ডের মতো দেশগুলো থেকে আসতো৷

কিন্তু সময়ের সাথে সাথে গত শতকের শেষের দশকের শুরুর দিকে শীতল যুদ্ধের যখন ইতি ঘটেছে, তখন মিশনগুলোর ভয়াবহতা দেখে পশ্চিমা সরকারগুলো শান্তিরক্ষা কর্মকাণ্ড থেকে ক্রমশ সেনা সরিয়ে নিতে শুরু করে৷ তার বদলে তারা অর্থ সহায়তা প্রদান করায় প্রাধান্য দেয়৷

জাতিসংঘে কাজ করার অভিজ্ঞতা থাকা পশ্চিম ইউরোপের একটি দেশের এক রাজনৈতিক সূত্র জানান যে, গণতান্ত্রিক সরকারগুলোকে সেনাদের রক্তক্ষয় কতটা সহ্য করা যাবে তা বিবেচনায় আনতে হয়৷ যদি জাতিসংঘের মিশনে পাঠানো সেনাদের মরদেহ ফিরতে শুরু করে, তিনি ব্যাখ্যা করেন, তখন সেই সরকারগুলোকে সংসদীয় তদন্তের মুখে পড়তে হয়৷ কিন্তু, তিনি যোগ করেন, বাংলাদেশের মতো দেশগুলোর ক্ষেত্রে এটি কোনো সমস্যা নয়৷ একইসঙ্গে তিনি স্বীকার করেন যে, জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা মিশন একক সেনা সদস্যদের পাশাপাশি বিভিন্ন সরকারের জন্যও নিজেদের কোষাগার সমৃদ্ধ করার লোভনীয় সুযোগ৷

প্রায় ‘কখনোই পর্যাপ্ত' শান্তিরক্ষী ছিল না

ফলাফল: ‘‘জাতিসংঘে খুব, খুব কম উচ্চপ্রশিক্ষণপ্রাপ্ত, পশ্চিমা আদর্শের সেনা কাজ করছেন,’’ বলেন গিলমোর৷ জাতিসংঘের আনুষ্ঠানিক পরিসংখ্যানও তার এই বক্তব্যকে সমর্থন করে৷ বর্তমানে জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা মিশনে সবচেয়ে বেশি সেনা সরবরাহকারী প্রথম পাঁচটি দেশ হচ্ছে: নেপাল, ভারত, রুয়ান্ডা, বাংলাদেশ এবং পাকিস্তান৷

‘‘প্রায় কখনোই পর্যাপ্ত সেনা ছিল না,’’ বলেন গিলমোর৷ ‘‘এটা এমন নয় যে জাতিসংঘ বলতে পারে, ঠিক আছে, আমরা এই দলটি নেবো কারণ এই দেশ মানবাধিকারের প্রতি সম্মান প্রদর্শন করে৷ এবং আমি দুঃখিত, আপনাদেরকে নিতে পারছি না৷’’

জাতিসংঘের ‘‘এমন বাছাইয়ের সুযোগ নেই৷’’

গিলমোর বলেন, ‘‘এমন এমন পরিস্থিতি তৈরি হয় যেখানে আক্ষরিক অর্থেই শান্তিরক্ষীরা অনুপস্থিত থাকলে হাজার হাজার মানুষের প্রাণহানী হতে পারতো৷ আর তখন আপনাকে সমন্বয় সাধন করতে হয়, হাজার হাজার লোকের মৃত্যুর চেয়ে দুই তিনটি ‘পচা আপেল' বা ‘মন্দ লোক' পাঠানো অপেক্ষাকৃত কম খারাপ বিকল্প মনে হয়৷’’

শ্রীলঙ্কা: ‘ব্যাপকভাবে দায়মুক্তি’

এই স্বীকারোক্তিকে ‘অত্যন্ত বেদনাদায়ক’ মনে করেন ফ্রান্সিস হ্যারিসন৷ তিনি একসময় সাংবাদিক ছিলেন, পরবর্তীতে অ্যাক্টিভিস্ট হিসেবে শ্রীলঙ্কায় মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনাগুলোর তথ্যপ্রমাণ সংগ্রহ করা শুরু করেন৷

শ্রীলঙ্কায় সেনাবাহিনী এবং তামিল টাইগারদের মধ্যে যুগ যুগ ধরে চলা গৃহযুদ্ধের সময় সংঘটিত নৃশংসতার তথ্যপ্রমাণ হিসেবে বিভিন্ন ছবি আর জবানবন্দি ল্যাপটপে বিভিন্ন রংয়ের ফোল্ডারে জমিয়ে রেখেছেন তিনি৷ এই সংঘাত ২০০৯ সালে এক বিশেষ পরিণতিতে পৌঁছায়৷ দুইপক্ষই ভয়াবহ মানবাধিকার লঙ্ঘনের সঙ্গে জড়িত ছিল, যা জাতিসংঘ বলছে যুদ্ধাপরাধের সমতুল্য হতে পারে৷

হ্যারিসনের অনেক নথিপত্রের মধ্যে একটি কিছুটা অস্বচ্ছ ছবিতে শ্রীলঙ্কার একদল কর্মকর্তাকে দেখা যাচ্ছে যারা বৃষ্টি থেকে বাঁচতে রঙিন ছাতার নিচে দাঁড়িয়ে আছেন৷ তাদের সামনে তেরপলের উপরে রাখা আছে বেশ কয়েকটি মরদেহ৷ একজন কর্মকর্তা সেগুলোর দিকে দৃষ্টি আকর্ষণ করছিলেন৷

তার নাম শেভেন্দ্র সিলভা৷

তিনি ৫৮ ডিভিশনের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন যেটি ‘‘বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডসহ বিস্তৃত মানবাধিকার লঙ্ঘনের সঙ্গে’’ জড়িত বলে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর জানিয়েছে৷ গৃহযুদ্ধ চলাকালে যুদ্ধাপরাধের সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকার দায়ে ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে শেভেন্দ্র সিলভার উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র৷

তার আগে ২০১৯ সালে অবশ্য শ্রীলঙ্কা তাকে সেনাপ্রধান করে৷ এই নিয়ে জাতিসংঘের নিজস্ব মানবাধিকার গ্রুপসহ আন্তর্জাতিক পর্যায়ে হট্টগোল সৃষ্টি হলে ভবিষ্যতে শান্তিরক্ষা মিশনে শ্রীলঙ্কার সেনা মোতায়েন স্থগিত রাখার ঘোষণা দেয় জাতিসংঘ৷ তবে ‘‘যেখানে এই স্থগিতাদেশের কারণে জাতিসংঘের কর্মকাণ্ড পরিচালনা ঝুঁকির মুখে পড়বে’’ সেখানে এই স্থগিতাদেশ কার্যকর হবে না বলেও জানায় জাতিসংঘ৷

জাতিসংঘের নিজস্ব পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২০১৯ সালে ৬৮৭ জন শান্তিরক্ষী পাঠিয়েছিল শ্রীলঙ্কা৷ সিলভা সেনাপ্রধান হওয়ার এক বছর পরও তারা ৬৬৫ জন সেনা পাঠিয়েছে৷

এই স্থগিতাদেশ, জাতিংঘের শান্তিরক্ষা বিষয়ক মুখপাত্র লিখেছেন, ‘‘জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা কার্যক্রম পরিচালনাকে মারাত্মক ঝুঁকির মুখে ফেলতে পারতো বলে এসব কন্টিনজেন্টের ক্ষেত্রে ব্যতিক্রম করা হয়, একইসঙ্গে বিদ্যমান মোতায়েনগুলো পর্যালোচনায় রাখা হয়েছিল৷’’

তার এই বক্তব্য অবশ্য আগের বক্তব্যের সঙ্গে মানানসই নয় যেখানে তিনি বলেছেন যে একক কোনো সেনা সহায়তা প্রদানকারী দেশ সেনা প্রত্যাহার করে নিয়ে শান্তিরক্ষা কর্মকান্ডের কার্যকারিতা নষ্ট করতে পারবে না৷
বেশ কয়েকটি ছবিতে দেখা গেছে, শেভেন্দ্র সিলভার উর্দিতে অনেক মেডেল ঝুলছে, আর অনেকের মাঝে শুধু তার মাথায় জাতিসংঘের গোল টুপি৷

‘‘আপনি কি ধারনা করতে পারেন এটা দেখার পর গৃহযুদ্ধের ভুক্তভোগীদের, লঙ্ঘনের শিকারদের, প্রতিক্রিয়া কী হয়েছিল?,'' হ্যারিসনের কণ্ঠে স্পষ্টতই রাগ ফুটে উঠেছিল৷ ‘‘এটি ব্যাপকভাবে দায়মুক্তি, যা বন্ধে কেউই কোনো উদ্যোগ নিচ্ছে না৷’’

হ্যারিসন শ্রীলঙ্কার একক শান্তিরক্ষীদের সম্পর্কে, যারা সম্ভবত যুদ্ধের সময় নৃশংসতার সঙ্গে জড়িত ছিলেন, জাতিসংঘ এবং অন্যদেরকে কয়েকবছর ধরে সতর্ক করেছিলেন৷ তারপরও তাদের শান্তিরক্ষী হিসেবে মোতায়েন করা হয়েছিল৷

২০১৯ সালে তিনি এক সামরিক কর্মকর্তা সম্পর্কে জাতিসংঘকে সতর্ক করেছিলেন, যাকে তখন মালিতে কন্টিনজেন্ট কোম্পানি কমান্ডার হিসেবে মোতায়েন করা হচ্ছিল৷

কিন্তু জাতিসংঘ মনে হচ্ছে তার সেই সতর্কতা গুরুত্বের সঙ্গে নেয়নি৷ এটা আমাদের খুঁজে পেতে বেশি সময় লাগেনি যে সেই ব্যক্তিকে ২০১৯ সালে আসলেই মালিতে কন্টিনজেন্ট কোম্পানি কমান্ডার হিসেবে মোতায়েন করা হয়েছিল৷ এবং সেটা ঘটেছিল হ্যারিসন সতর্ক করার কিছুদিন পর৷ এক ছবিতে জাতিসংঘের গোল টুপি মাথায় তাকে এক বিমানবন্দরে দেখা যায় যেখানে তার সঙ্গে ছিলেন সেনাপ্রধান শেভেন্দ্র সিলভা৷

এবং আমাদের গবেষণায় দেখা গেছে ২০২১ সালেও তিনি মালিতে দায়িত্ব পালন করেছেন৷

হ্যারিসন জানান যে, তার সতর্কবার্তা ‘‘গ্রাহ্য করা হয়নি৷’’

জাতিসংঘের মুখপাত্র ডিডাব্লিউ, নেত্র নিউজ এবং স্যুডডয়চে সাইটুংকে লিখেছেন যে, তারা এসব অভিযোগ ‘‘গুরুত্ব সহকারে নিয়েছিল৷ কিন্তু তারা সেসময় এমন কোনো তথ্য পাননি যা যুক্তিসঙ্গত ভিত্তি দেয় যে, সেই ব্যক্তি সম্ভবত মানবাধিকার লঙ্ঘনের জন্য দায়ী৷’’

‘বাংলাদেশ কাদের পাঠাচ্ছে তা কেউ পরোয়া করে না’

আমাদের অনুসন্ধান একটি বিষয়ের দিকে ইঙ্গিত দিচ্ছে: সেনা বাছাইয়ের বিষয়টি যখন সামনে আসে তখন জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা কার্যক্রম বিভাগ এক কঠিন দ্বিধার মধ্যে পড়ে যায়৷ এটির হয় এমন সেনাদের মেনে নিতে হয় যারা এটি জানে যে কিছুক্ষেত্রে হয়ত মানবাধিকার লঙ্ঘনের সঙ্গে জড়িত, অথবা সেনা প্রদানকারী দেশগুলোর সেনা প্রত্যাহারের হুমকির মুখে পড়তে হয়৷ ফলে জাতিসংঘের ভাষায় পৃথিবীর সবচেয়ে অসহায়দের সুরক্ষা দেয়ার কর্মকাণ্ড চালিয়ে নিতে এটির কিছু বিষয় থেকে নজর সরিয়ে নিতে হয়৷

বাংলাদেশের ক্ষেত্রে আমাদের অনুসন্ধান জানাচ্ছে জাতিসংঘ সম্ভবত নজর সরিয়ে রাখার নীতি নিয়েছে৷

কেউই, পশ্চিম ইউরোপের এক রাজনৈতিক সূত্র জানিয়েছেন, আসলে পরোয়া করে না যে বাংলাদেশ কাদের পাঠাচ্ছে, কারণ জাতিসংঘ মিশনে সেনা ঘাটতি রয়েছে৷ এবং, তিনি যোগ করেন, বাংলাদেশের মতো সামরিকীকৃত দেশগুলোর সেনারা সাধারণত ভালোভাবে প্রশিক্ষিত হয়৷

এই বক্তব্য এটা ব্যাখ্যা করতে পারে যে কেন রাজধানী ঢাকার কাছে জাতিসংঘের প্রশিক্ষণক্ষেত্রে ডয়চে ভেলের সাম্প্রতিক সফরের সময়, যেটি সতর্কতার সঙ্গে সাজানো হয়েছিল, একজন জেনারেল আগে থেকে অনুমোদিত প্রশ্নের উত্তরে জানান যে বাংলাদেশ আসলে জাতিসংঘের শান্তিরক্ষায় অবদান বাড়ানোর পরিকল্পনা করছে৷

এটা দেখাচ্ছে, তিনি বলেন, ‘‘তারা আমাদের কেমন গুরুত্ব দেয়৷’’ সেই সময় একজন প্রেস কর্মকর্তা পাশে দাঁড়িয়ে ছিলেন৷

তারা বলতে তিনি অবশ্যই জাতিসংঘকে বুঝিয়েছেন৷

আমরা এই প্রতিবেদনে উল্লেখ করা কর্মকর্তারাসহ বাংলাদেশ ও শ্রীলঙ্কা সরকারের কাছে আমাদের অনুসন্ধান নিয়ে তাদের বক্তব্য জানতে চেয়েছিলাম৷ কিন্তু তারা কোনো জবাব দেয়নি৷

জাতিসংঘের ‘ডিপার্টমেন্ট অব পিসকিপিং অপারেশন্স' গুরুত্ব সহকারে জানিয়েছে যে ‘‘সেনাদের অধিকাংশই ভালো করেন, যদিও তাদের অনেককে প্রতিকূল পরিবেশে সীমিত সম্পদ নিয়ে দায়িত্ব পালন করতে হয়৷’’-ডয়চে ভেলে

যুক্তরাষ্ট্রের মানবাধিকার রিপোর্ট ২০২২

যুক্তরাষ্ট্রের মানবাধিকার রিপোর্ট ২০২২


সোমবার বাংলাদেশ সময় রাতে প্রকাশিত মার্কিন মানবাধিকার বিষয়ক রিপোর্ট এখন টক অব দ্য কান্ট্রি। রাজনীতির আলোচনার নয়া খোরাক। বাংলাদেশসহ বিশ্বের ১৯৮টি দেশ ও অঞ্চলের  মানবাধিকার পরিস্থিতির ওপর ভিত্তি করে এই প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। প্রতিবেদনের বাংলাদেশ অংশে বিচারবহির্ভূত হত্যা, গুম, নির্যাতন, কারাগারে নির্যাতন, নির্বিচারে গ্রেপ্তার বা আটক, রাজনৈতিক বন্দি, কোনো ব্যক্তির অপরাধের জন্য পরিবারের সদস্যদের শাস্তির মুখে পড়ার কথা বলা হয়েছে। সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে সহিংসতা বা সহিংসতার হুমকি, সাংবাদিকদের অযৌক্তিকভাবে গ্রেপ্তার, মতপ্রকাশ সীমিত করার জন্য ফৌজদারি মানহানি আইন কার্যকর, স্বাধীন মতপ্রকাশ এবং মিডিয়ার ওপর বিধিনিষেধের বিষয়ও উঠে এসেছে প্রতিবেদনে। ইন্টারনেট স্বাধীনতার ওপর নিষেধাজ্ঞা, শান্তিপূর্ণ সমাবেশের স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপের মতো বিষয়গুলোও স্থান পেয়েছে স্টেট ডিপার্টমেন্টের রিপোর্টে। রিপোর্ট প্রকাশের পর রাজনৈতিক দলগুলো থেকে এ নিয়ে ভিন্ন ভিন্ন প্রতিক্রিয়া এসেছে। আওয়ামী লীগ নেতারা রিপোর্টকে পক্ষপাতদুষ্ট বলে মন্তব্য করেছেন। তারা বলছেন, মার্কিন প্রতিবেদন একপেশে। যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচন ও মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে উল্টো প্রশ্ন তুলছেন আওয়ামী লীগ নেতারা।
প্রশ্ন তুললেও মার্কিন রিপোর্ট প্রত্যাখ্যান করেননি আওয়ামী লীগ নেতারা।
তবে বিরোধী দলগুলো বলছে যুক্তরাষ্ট্রের এই প্রতিবেদনই প্রমাণ করে দেশে মানবাধিকার বলতে কিছু নেই। নির্বাচন নিয়ে যে আপত্তি তারা জানিয়ে আসছেন মার্কিন রিপোর্টে তা আবারো প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। রিপোর্টে যেসব বিষয় তুলে ধরা হয়েছে তা দেশের এবং দেশের মানুষের জন্য লজ্জার। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, জাতীয় নির্বাচনের আগে মার্কিন এই রিপোর্ট রাজনীতির মাঠে নয়া খোরাক যোগাবে।
*মার্কিন প্রতিবেদন পক্ষপাতদুষ্ট বললেন তথ্যমন্ত্রী:* পক্ষপাতদুষ্ট সূত্র থেকে সংগৃহীত তথ্যের ভিত্তিতে মার্কিন মানবাধিকার প্রতিবেদন প্রস্তুত করা হয়েছে বলে দাবি করেছেন তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ। গতকাল সকালে সচিবালয়ে মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে বাংলাদেশ ফেডারেল ইউনিয়ন অব নিউজ পেপার প্রেস ওয়ার্কার্স ও বাংলাদেশ সংবাদপত্র কর্মচারী ফেডারেশনের নেতৃবৃন্দের সঙ্গে মতবিনিময় শেষে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ মন্তব্য করেন। মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের বার্ষিক মানবাধিকার প্রতিবেদনে উল্লিখিত বাংলাদেশ বিষয় নিয়ে করা প্রশ্নের জবাবে তথ্যমন্ত্রী বলেন, একটি সূত্র থেকে নয়, সরকারবিরোধী এবং পক্ষপাতদুষ্ট বিভিন্ন সূত্র থেকে তারা তথ্যগুলো সংগ্রহ করেছে। সুতরাং সেই প্রতিবেদনটা একপেশে। অবশ্যই পুরো প্রতিবেদন প্রত্যাখ্যান করছি না কারণ সেখানে অনেক ভালো কথাও বলা আছে। সার্বিকভাবে আমাদের মানবাধিকার, নির্বাচন, গণতন্ত্র সংক্রান্ত যে সমস্ত বিষয়াদি আছে সেগুলো পক্ষপাতদুষ্ট। হাছান মাহমুদ বলেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচন নিয়েও তো অনেক প্রশ্ন আছে। ডনাল্ড ট্রাম্প তো এখনো নির্বাচনে পরাজয় মেনে নেননি। সেটির প্রেক্ষিতে ডনাল্ড ট্রাম্পের নেতৃত্বে যেভাবে ক্যাপিটল হিলে হামলা হয়েছে, সে ধরনের ন্যক্কারজনক ঘটনা তো আমাদের দেশে কখনো ঘটে নাই। সুতরাং নির্বাচন নিয়ে প্রশ্ন তোলার আগে তাদের নিজেদের নির্বাচনী ব্যবস্থা নিয়ে যে প্রশ্নগুলো আছে বা তাদের নির্বাচন হওয়ার পর ক্যাপিটল হিলে যে হামলা, সেই বিষয়গুলোর দিকে তাদের তাকানো প্রয়োজন বলে আমি মনে করি।
ভবিষ্যতে অন্য কোনো বড় দেশ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মানবাধিকার কিংবা নির্বাচনী ব্যবস্থা নিয়ে প্রতিবেদন দেয় কিনা, সেটিও দেখার বিষয়।
*মার্কিন প্রতিবেদন দেশের জন্য লজ্জার- ফখরুল:* মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিবেদনে বাংলাদেশের গণতন্ত্র ও মানবাধিকার নিয়ে সঠিক তথ্য তুলে ধরা হয়েছে এবং তা দেশের জন্য লজ্জার বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি’র মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেছেন, মার্কিন মানবাধিকার নিয়ে যে প্রতিবেদন দিয়েছে তাতে লজ্জিত। দেশে এখন গণতন্ত্র, মানবাধিকার, বাকস্বাধীনতা নেই। রিপোর্ট প্রকাশের পরে আওয়ামী লীগের নেতারা নিজেদের মতো বানিয়ে কথা বলছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র নিজেরা গণতন্ত্রকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিতেই বিশ্বে নেতৃত্ব দিচ্ছে।
গতকাল দুপুরে ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউটে বিএনপি’র সাবেক মহাসচিব কেএম ওবায়দুর রহমানের ১৬তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে স্মরণসভায় তিনি এসব কথা বলেন।
*সরকারের আপত্তি রয়েছে-পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী:* মার্কিন মানবাধিকার রিপোর্টের বিষয়ে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম বলেন, মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মানবাধিকার বিষয়ক প্রতিবেদনে উঠে আসা বিভিন্ন পর্যবেক্ষণ নিয়ে বাংলাদেশ সরকারের আপত্তি রয়েছে। এই আপত্তির বিষয়গুলো দুই দেশের মধ্যে উচ্চ পর্যায়ের আলোচনায় তুলে ধরা হবে।
গত মঙ্গলবার দেয়া এক প্রতিক্রিয়ায় তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিবেদনের মৌলিক কিছু দুর্বলতা রয়েছে। আমরা বিশ্লেষণ করে দেখবো, এগুলোয় আদৌ আমলে নেয়ার কোনো বিষয় আছে কিনা। আপত্তির দিকগুলো ও দুর্বলতা সামনের দিনগুলোয় দুই দেশের মধ্যে কোনো উচ্চ পর্যায়ের সফর বা বৈঠকে তুলে ধরা হবে, যাতে পরবর্তী প্রতিবেদনে তা না থাকে।
মার্কিন প্রতিবেদনের বিষয়ে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী বলেন, একটি বন্ধুরাষ্ট্র নিয়ে রিপোর্টটি তৈরি করা হয়েছে। আমরা দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে বলে থাকি, এ ধরনের রিপোর্ট প্রকাশ হওয়ার আগে আমরা যাতে আত্মপক্ষ সমর্থন করতে পারি। বিভিন্ন সময়ে প্রতিশ্রুতি দেয়া হয় এবং বরাবরের মতো এবারো প্রতিশ্রুতি রক্ষা করা হয়নি। আমি মনে করি, এটি একটি বড় ধরনের দুর্বলতা।
মার্কিন প্রতিবেদনে আরেকটি দুর্বলতা রয়েছে বলে প্রতিমন্ত্রী উল্লেখ করেন। সেটি হলো মার্কিন প্রতিবেদনে উন্মুক্ত সূত্র থেকে উপাত্ত সংগ্রহ করা হয়েছে। এতে স্ববিরোধী অবস্থান প্রকাশ পায়। তিনি বলেন, অনেক সময় যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে বলা হয়, গণমাধ্যমের স্বাধীনতা খর্ব করা হচ্ছে, বাক‌স্বাধীনতা খর্ব করা হচ্ছে। কিন্তু তাদের প্রতিবেদনে উন্মুক্ত সূত্রের অনেক উদাহরণ আছে। এতে প্রমাণিত হয় যে খবর তৈরিতে সরকার বাধা প্রদান করে না। ২০২১ ও ২০২২ সালের মার্কিন প্রতিবেদনের মধ্যে গুণগত কোনো তফাত নেই বলে উল্লেখ করেন শাহরিয়ার আলম। বলেন, কোথাও কোথাও আমাদের প্রশংসা করা হয়েছে এবং সেজন্য তাদের ধন্যবাদ জানাই। বিশেষ করে বিভিন্ন জায়গায় আমরা উন্নতি করেছি, তার প্রতিফলন এই প্রতিবেদনে রয়েছে।
*যা আছে মার্কিন প্রতিবেদনে:* যুক্তরাষ্ট্রের মানবাধিকার বিষয়ক প্রতিবেদনে বাংলাদেশের বিগত জাতীয় নির্বাচন নিয়ে বড় প্রশ্ন তোলা হয়েছে। বলা হয়েছে, ওই নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু ছিল না। ওই রিপোর্টে বলা হয়, অনেক  মানুষকে রাজনৈতিক বন্দি ও আটক হিসেবে রাখা হয়েছে। রাজনৈতিক কারণে বিরোধী দলীয় নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তার ও বিচার করা হয়েছে। এই রিপোর্টে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের বিচারকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে উল্লেখ করা হয়। রিপোর্টে নিরাপত্তা রক্ষাকারী বাহিনীর আইন ও নিয়ম লঙ্ঘনের অভিযোগও আনা হয়। রিপোর্টে বলা হয়, মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিশ্বাসযোগ্য অনেক ঘটনা ঘটেছে। এর মধ্যে আছে বিচার বহিভূত হত্যাকাণ্ড, জোরপূর্বক গুম, নির্যাতন ও নিষ্ঠুরতা। মুক্ত মতপ্রকাশের ক্ষেত্রে বাধা রয়েছে বলে উল্লেখ করা হয় মার্কিন প্রতিবেদনে।
ব্যক্তিগত স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপের পাশাপাশি কোনো ব্যক্তি অপরাধ করলে তার পরিবারের সদস্যদের শাস্তি দেয়া হয় বলে উল্লেখ করা হয় প্রতিবেদনে।  রিপোর্টে জোরপূর্বক গুম, অপহরণের ঘটনা তুলে ধরা হয়েছে। বলা হয়েছে, এসব গুম, অপহরণের শিকার বেশির ভাগই বিরোধী রাজনৈতিক নেতাকর্মী ও ভিন্ন মতাবলম্বী। এসব অপরাধ প্রতিরোধে, তদন্তে এবং শাস্তি নিশ্চিত করতে সীমিত প্রচেষ্টা নিয়েছে সরকার।
মতপ্রকাশের স্বাধীনতা বিষয়ে বলা হয়েছে, ঘন ঘন এই অধিকারে হস্তক্ষেপ করে সরকার। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মানবাধিকার বিষয়ক গ্রুপ এবং মিডিয়ার রিপোর্টে অব্যাহত গুম এবং অপহরণের তথ্য উঠে এসেছে। নিরাপত্তা রক্ষাকারীরা এসব সংঘটিত করেছেন বলে অভিযোগ আছে।
রিপোর্টে আরও বলা হয়েছে, যেসব মিডিয়া সরকারের সমালোচনা করেছে, তাদেরকে চাপ দেয়া হয়েছে। মুক্তভাবে অথবা বিধিনিষেধ না মেনে কোনো নিরপেক্ষ মিডিয়া কাজ করতে পারে না। ইন্টারনেট ফ্রিডম বা ইন্টারনেটে স্বাধীনতা ইস্যুতে যুক্তরাষ্ট্র ওই রিপোর্টে বলেছে, ইন্টারনেট সুবিধায় বিধিনিষেধ দিয়েছে সরকার বা এই সুবিধায় বিঘœ ঘটিয়েছে। বহু ঘটনায় তারা অনলাইন কন্টেন্ট সেন্সর করেছে। ভার্চ্যুয়াল প্রাইভেট অনেক নেটওয়ার্ক এবং ভিওআইপি ফোন নিষিদ্ধ করা হয়েছে আইন দিয়ে। আইনগত যথাযথ কর্তৃত্ব না থাকা সত্ত্বেও অনলাইনে বেসরকারি পর্যায়ে যোগাযোগ মনিটরিং করছে সরকার। বিরোধী দলগুলো যেসব শহরে র‌্যালি ডেকেছিল সেখানে সরকার অক্টোবর থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত বিভিন্ন সময়ে ইন্টারনেট সেবা বন্ধ করে দিয়েছিল অথবা গতি কমিয়ে দিয়েছিল।
রিপোর্টে বলা হয়, শান্তিপূর্ণ সমাবেশের অধিকার সংবিধান দিলেও বিরোধী দলীয় নেতাকর্মীরা পুরো বছরেই বহুবিধ বিধিনিষেধের মুখোমুখি হয়েছেন। বিরোধী বিএনপিকে নিয়মিতভাবে সমাবেশের অধিকার প্রত্যাখ্যান করা হয়েছে অথবা কর্তৃপক্ষ ও ক্ষমতাসীন দলের নেতাকর্মীরা ভীতি প্রদর্শন করেছে।

বিশ্বকাপ খেলতে যুক্তরাষ্ট্রে পৌঁছেছে বাংলাদেশ দল

বিশ্বকাপ খেলতে যুক্তরাষ্ট্রে পৌঁছেছে বাংলাদেশ দল

দরজায় কড়া নাড়ছে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ। বৈশ্বিক এই শুরুর আগে স্বাগতিক যুক্তরাষ্ট্রের বিপক্ষে তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজ খেলবে টাইগাররা। ইতিমধ্যেই যুক্তরাষ্ট্রের মাটিতে পা রেখেছে লাল-সবুজের প্রতিনিধিরা।

শুক্রবার (১৭ মে) বাংলাদেশ সময় ভোর চারটায় হাউসটনের জর্জ বুশ ইন্টারকন্টিনেন্টাল এয়ারপোর্টে পৌঁছে নাজমুল হোসেন শান্তর দল।

এর আগে বুধবার (১৫ মে) দিবাগত রাত ১.৪০ মিনিটের ফ্লাইটে যুক্তরাষ্ট্রের উদ্দেশে উড়াল দিয়েছিল বাংলাদেশ দল। সেই দলে ছিলেন স্কোয়াডে থাকা ক্রিকেটার, ট্রাভেলিং রিজার্ভ, টিম ম্যানেজমেন্ট ও কোচিং স্টাফের সদস্যরা।

দেশ ছাড়ার আগে বিমানবন্দরে পরিবারকে নিয়ে হাজির হন তাসকিন–সৌম্য ও লিটন দাসরা। যেখানে টাইগার সমর্থকদের ভিড়ের মুখে পড়তে হয়েছে তাদের। এ সময় কেউ তারকা ক্রিকেটারদের সঙ্গে সেলফির আবদার মিটিয়েছেন, আবার কেউবা শুভকামনা জানিয়েছেন বিশ্বকাপে ভালো পারফর্ম করার আশায়।

দেশ ছাড়ার আগে সংবাদ সম্মেলনে নিজেদের লক্ষ্যের কথা জানিয়ে অধিনায়ক শান্ত বলছিলেন, ‘বাংলাদেশের সবাই নিশ্চয়ই ভালো প্রত্যাশা করে, আমিও করি। আমার মনে হয়, আমরা যদি সুন্দরভাবে ছোট ছোট চিন্তা করে আগাই, তাহলে ভালো হবে। আমরা যে গ্রুপে আছি, সেটাকে খুব সহজ বলব না। গ্রুপ পর্বটা পার করতে পারলে ভালো হবে। এরপর দেখা যাবে। আশা তো করছি এবার ভালো কিছু হবে। প্রস্তুতি ও সমন্বয় মিলিয়ে মনে হচ্ছে, আমাদের দলটা খুব ভালো। তবে নির্দিষ্ট দিনে ভালো খেলাটা জরুরী। আশা করছি, এবার সবাই সেটা করবে।’

আগামী ২ জুন যুক্তরাষ্ট্র এবং ওয়েস্ট ইন্ডিজের মাটিতে বসতে যাচ্ছে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের নবম আসর। তবে বাংলাদেশের অভিযান শুরু হবে ৭ জুন থেকে। যুক্তরাষ্ট্রের ডালাসে শান্তর দল শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে বিশ্বকাপ শুরু করবে। ১০ জুন বাংলাদেশ লড়বে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে। পরবর্তীতে ১৩ জুন নেদারল্যান্ডস এবং ১৭ জুন নেপালের বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে গ্রুপ পর্ব শেষ করবে বাংলাদেশ।

Loading section...

Loading section...

Loading section...

Loading section...

Loading section...

Loading section...

Loading section...

Loading section...

Loading section...